নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেনটন ট্যারান্ট একাই হামলা চালিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস নিউজিল্যান্ড পুলিশের।
পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেছেন, আটক আরও তিনজনের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবারই ছেড়ে দেয়া হয়। বাকি দু’জনকে আরও তদন্তের জন্য রাখা হলেও পুলিশের ধারণা, তাদের কেউই হামলাটির সঙ্গে জড়িত নয়।
তবে এখনই এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে রোববার সংবাদ সম্মেলনে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, স্কুল ও মসজিদসহ ক্রাইস্টচার্চজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। অস্ত্র আইন পরিবর্তন নিয়ে সোমবার মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের ‘অস্ত্র আইন পরিবর্তন হওয়া দরকার এবং পরিবর্তন করা হবে’ বলে ঘোষণা করেন আরডার্ন।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, শুক্রবার মসজিদে হামলার কয়েক মিনিট আগে তাকে একটি হামলা বিষয়ে ‘প্রচারণামূলক ইশতেহার’ ইমেইলে পাঠিয়েছিলেন ট্যারান্ট।
স্বঘোষিত শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী ২৮ বছর বয়সী ট্যারান্ট শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নূর এবং লিনউড মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিতে বন্দুক হামলা চালান। হামলা করার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেটি লাইভ স্ট্রিম করছিলেন তিনি।
মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলেও একটু দেরিতে যাওয়ায় বেঁচে যান নিউজিল্যান্ডে সফররত বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০-এ দাঁড়িয়েছে বলে স্থানীয় সময় রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ কমিশনার। আর আহত ৪৭ জনের মধ্যে দু’ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মাইক বুশ জানান, নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সবার পরিচয় দ্রুত প্রকাশ করতে কাজ চলছে। মসজিদে হামলার পর থেকে সব ধরনের উপাসনালয়সহ পুরো ক্রাইস্টচার্চে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ভয়াবহ এ হামলা চালানো ব্রেনটন ট্যারান্টকে ইতোমধ্যে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
শনিবার আটাশ বছর বয়সী ট্যারান্টকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানেই আদালত তাকে জামিন অযোগ্য পুলিশি হেফাজতে রিমান্ডের আদেশ দেন। ৫ এপ্রিল ট্যারান্টকে আবারও আদালতে হাজিরার তারিখ দেয়া হয়েছে। ততদিন তিনি পুলিশের হেফাজতেই থাকবেন।