দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকদের কাছ থেকে সারচার্জ আদায় অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
অর্থআইন অনুসারে সারচার্জ আরোপ ও আদায় সাংবিধানিক বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
এসময় আদালত বলেছেন, অর্থআইন অনুসারে সারচার্জ আদায় অব্যাহত থাকবে।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও রমজান আলী শিকদার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীর।
অর্থআইন অনুসারে বিভিন্ন অর্থবছরে আয়করের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয় বলে জানান আইনজীবী।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ থেকে ১০ কোটি টাকার মালিকদের আয়ের উপর ১০ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ কোটি টাকার মালিকদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ কোটি টাকার মালিকদের ওপর ২০ শতাংশ এবং ৩১ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক হলে আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে সারচার্জ পুনর্বিন্যাস্ত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
রাজস্ব বোর্ডের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রাজস্ব বোর্ড ঘোষিত হারে সারচার্জ নেওয়া ‘সাংবিধানিক’ ঘোষণা করেন। পড়ে ওই রায়ের বিরুদ্ধেই আপিল বিভাগে আবেদন করেন ব্যবসায়ীরা।
আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, অর্থআইন অনুসারে সারচার্জ আদায় অব্যাহত থাকবে বলে আদালত বলেছেন। আবেদনকারী যারা আছেন, তারা অর্থআইন অনুসারে সারচার্জ দিয়ে যাবেন, তাও বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অর্থআইন অনুসারে দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকদের সারচার্জ দিতে হবে। বিভিন্ন অর্থবছরে অর্থআইন অনুসারে এই সারচার্জ আরোপ করা হয়। আয়করের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে ওই সারচার্জ আরোপ করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে বিভিন্ন অর্থবছরে অর্থ আইন অনুসারে দেয়া সারচার্জের বিধান চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে বিভিন্ন ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গেল বছরের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। যেখানে রিট আবেদনের সংখ্যা ছিল ১০০টির মতো। এসব রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষ করেন হাইকোর্ট।
ওই রায়ে হাইকোর্ট সারচার্জ আরোপের বিধান সাংবিধানিক ঘোষণা করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি আপিল বিভাগে আলাদা ২৬টি লিভ টু আপিল করেন। শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার আদালত লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।