গান যতোই বিখ্যাত হোক, কিংবা থাকুক সবার মুখে মুখে। তাতে সেই গানের স্রষ্টার কী আসে যায়? যদি তার মূল্যায়ণই না হয়! বহু বছর ধরে এভাবেই অবমূল্যায়িত হয়ে আসা একজন গীতিকবি, শিল্পী রতন কাহার। রীতিমত স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দুঃসময়েই কাটছিলো তার দিন। নানা তর্ক, বিতর্ক শেষে এবার তাঁকে সাহায্যে এগিয়ে এলেন ভারতীয় বিখ্যাত শিল্পী বাদশা।
সম্প্রতি ভারতীয় টি-সিরিজের ব্যানারে মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় শিল্পী বাদশার ‘লাল গেন্দা ফুল’ গানটি নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা, সমালোচনা হচ্ছে। নিজের গানের সাথে বাদশা জুড়ে দিয়েছেন রতন কাহারের লেখা সত্তর দশকের ‘বড়লোকের বেটি লো’–লোকগানের দুটি লাইন। কিন্তু গানের কোথাও উল্লেখ করেননি তার নাম। বাদশা দুঃস্থ এই শিল্পীকে তার প্রাপ্য দেননি, এই অভিযোগও ওঠে।
তুমুল তর্ক বিতর্কের পর ভারতীয় শিল্পী রতন কাহার তার নিজের লেখা ও গাওয়া ‘লাল গেন্দা ফুল’ গানটি নিয়ে নিজের দুঃখ বেদনার কথাও জানান গণমাধ্যমে। চ্যানেল আই অনলাইনকেও একটি সাক্ষাৎকারে বাদশাকে নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন ৮৫ বছর বয়সী এই শিল্পী।
এই গান নিয়ে সমালোচনা ও সোশাল মিডিয়া বহু তর্ক-বিতর্কের পর বাদশা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন সোশাল মিডিয়ায়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এই বলে যে, ‘লাল গেন্দা ফুল’ গানটি যে রতন কাহারের লেখা তিনি জানতেন না। এরপর এই প্রবীন শিল্পী ও গীতিকারের সঙ্গে দেখা করারও ইচ্ছা পোষণ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় বাদশা যোগাযোগ করেন রতন কাহারের সঙ্গে। এই কাজের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। বুধবার সকালে চ্যানেল আই অনলাইনকে রতন কাহার জানান, ‘হ্যাঁ, বাদশা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি অত্যন্ত ভাল মানুষ, মহান শিল্পী। তিনি জানতেন না ‘লাল গেন্দা ফুল’ আমার লেখা। উনারই বা দোষ কী, আমাকে যারা চিনতেন, তারাই তো এই গানের উচিত মূল্যায়ণ করেননি। বাদশার উপর আমার আর ক্ষোভ নেই।’
এরইমধ্যে গত ৬ এপ্রিল বাদশা টাকা পাঠিয়েছেন বলেও জানান রতন কাহার। তিনি বলেন, বাদশা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেন। ৬ তারিখে দেখি আমাকে তিনি ৫ লাখ রুপি পাঠিয়েছেন। আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার পুরো শিল্পী জীবনে এমন মূল্যায়ন আমি কখনো পাইনি। বাদশার ভাল হোক।
রতন কাহার জানান, বর্তমানে সব লকডাউন। বাদশা আমাকে জানিয়েছেন, দেশের অবস্থা ভাল হলে তিনি আমার বাড়িতে এসে সাক্ষাৎ করবেন। আমার অন্য গানগুলোও তিনি শুনতে চেয়েছেন।
এদিকে ‘লাল গেন্দা ফুল’ গানটির জন্য রতন কাহারকে ৫ লাখ রুপি পাঠালেও টি-সিরিজের ব্যানারে প্রকাশিত গানটির ‘অরিজিনাল লিরিকস’-এর ক্রেডিটে এখনো লেখা ‘বাংলা ফোক’।