শাহ আলম শাহী: দিনাজপুরে বন্যার পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপায় এবং সাপে কেটে ১৪ জনের মুত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম।
রোববার চ্যানেল অাই অনলাইনকে জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় বন্যা জনিত কারণে জেলায় পানিতে ডুবে,দেয়াল চাপায় এবং সাপে কেটে ১৪ জনের মুত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে দিনাজপুর সদরে ৩ জন, বিরলে ৫ জন, কাহারোলে ৪ জন, নবাবগঞ্জে একজন এবং বীরগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পানিতে ডুবে ৯ জন, দেয়াল চাপায় দু’জন এবং সাপে কেটে ৩ জনের মৃত্যু হয়। জেলা প্রশাসনের বন্যা কন্ট্রোল রুম ও দিনাজপুরের ৫ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তরা নিশ্চিত করেছেন।
প্রবল বর্ষণে ভেলা উল্টে একই পরিবারের তিন শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়। এরা হলো বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রাামের আবদুর রহমানের মেয়ে চুমকি (১৩) শহিদ আলী (১০) ও সিয়াদ (৭) । কাহারোল উপজেলার পল্লীতে দেয়াল চাপা পড়ে আরোদা রানী দাস (৫০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ী এলাকার সাইফুল ইসলাম (৪৫) ঘরে বন্যার পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। বালুবাড়ী ঢিবিপাড়া এলাকার মেহেদী হাসান (১৫) ,সদর উপজেলার আবু নাইম (১৩) , সদর উপজেলার দরবারপুর গ্রামের চাঁন মিয়া (৫৫) বন্যার পানিতে পড়ে মারা যান। বিরল উপজেলার মালঝাড় এলাকার বাবলু রায়ের স্ত্রী দিপালী রায় (৩২) সাপের কামড়ে মারা যান।
এছাড়াও আরো দুজন সাপের কামড় এবং দু’জন পানিতে ডুবে মারা গেছে।
এদিকে, দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। জেলার সবকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভেঙে গেছে দিনাজপুর শহররক্ষা বাঁধসহ বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ। বাড়ি-ঘর ডুবে গিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় সাত লাখ মানুষ।জেলার দুই হাজার ৯৩০টি শিক্ষা প্রতষ্ঠানের অধিকাংশই বানভাসী মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
এদিকে বাঁধ রক্ষা ও বানভাসী মানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি কাজ করছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক। মেজর তৌহিদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ৫২ জন সদস্য বাঁধ সংস্কার ও বানভাসী মানুষকে উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এক লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ৬৭ মেট্রিক টন চাল বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যার্তদের জন্য ৫০ লাখ টাকা এবং ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।