শাহ্ আলম শাহী: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সুরুজ মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে রবিউল ইসলামকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ সময় তার বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সুরুজ মিয়াকে হত্যার পর তিনি শরিফ শহিদ (৪২) নামে একজন নৈশ্য প্রহরি এবং তার শিশু পুত্র একরামুল হক (৩) শামিমকেও কুপিয়ে আহত করেছে।
নিহত সুরুজ মিয়া বীরগঞ্জ জগদল হাটপুকুর জেলগেট এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। রবিউল ইসলাম একই এলাকার তারা মিয়ার ছেলে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলম জানান, রবিউল মানসিক ভারসাম্যহীন। এলাকায় পাগল বলেই পরিচিত সে। সুরুজ মিয়াকে হত্যা ও বাকি দুজনকে কুপিয়ে আহত করার পর বিক্ষুদ্ধ জনতা তাকে ধরে পুড়িয়ে মেরে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবিউল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় শালবাগান জেলখানা গেট এলাকায় সুরুজ মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার কয়েকঘণ্টা পর সকাল ৮টার দিকে রবিউলকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
বিক্ষুদ্ধ জনতা সকাল ৯টা পর্যন্ত দিনাজপুর পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিলা পারভীন।
এলাকাবাসী জানায়, ভোরে স্থানীয় মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় প্রথমে হামলার শিকার হন ভ্যান চালক সুরজ মিয়া। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।
এরপর একই এলাকার একটি মুরগী ফার্মের নৈশ প্রহরি শহিদ এবং ৩ বছর বয়সি শিশু পুত্র একরামূল হক শামিমকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম।
সকাল ৮টার দিকে রবিউল ইসলামকে কবিরাজহাট এলাকায় আটক করে ঘটনাস্থলে ধরে আনা হয়। এরপর জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এলাকা নিরাপদ হয়েছে দাবি করে এসময় অনেককে উল্লাস করতেও দেখা গেছে।
সকাল ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল কর্মীদের সহায়তায় আগুন নিভিয়ে রবিউলের পোড়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিউল ইসলামের বসতবাড়ী গুড়িয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। এ সময় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে তার পিতা-মাতাসহ স্বজনরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম সাম্প্রতিক সময়ে সুরজ মিয়ার ভাতিজা চা দোকানদার বসির উদ্দিনকেও কুপিয়ে হত্যা করে। এছাড়াও আরো কয়েক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় সে।