চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

দানব রুখতে গান্ধীর শিক্ষা

হলি আর্টিজানে হামলা করা ‘দানবরা’ যাতে আর তৈরি না হয় সেজন্য মহাত্মা গান্ধীর অহিংসার বাণী-মতবাদ সামাজিকভাবে বাস্তবায়ন করার তাগিদ দিয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

গান্ধী দর্শনের বাস্তবায়নে বর্তমান প্রজন্মের করণীয় নিয়ে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন,‘মানবিক সমাজ গড়তে না পারলে কোনো অর্জনই কাজে আসবে না।’

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মহাত্মা গান্ধীর ১৪৮তম জন্মজয়ন্তী এবং আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন,‘এখন বিপণনবাদী সময় চলছে, মানুষের মধ্যে লোভ মাথাচাড়া দিচ্ছে। এজন্য সমাজে নৈরাজ্য, সহিংসতা সৃষ্টি হচ্ছে। এমন সাম্প্রদায়িক-অসহিষ্ণু পরিবেশ হলি আর্টিজানে হামলা চালানো দানবদের তৈরি করে। ৫টি তরতাজা যুবক ঠাণ্ডা মাথায় এতোগুলো মানুষকে হত্যা করলো। হত্যার শিকারদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী ছিলেন, ওরা অনাগত বাচ্চাটার জন্য ওই নারীর বাঁচার আকুতিতেও কান দেয়নি।’

এমন সহিংস বাস্তবতায় গান্ধীর অহিংসার বাণীকে কেবল আলোচনার টেবিল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ দেখতে চান না একাধারে দেশ বরেণ্য এই অভিনেতা-রাজনীতিবিদ।

গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। রোহিঙ্গা সংকটে মানবিকতা এবং সন্ত্রাসের প্রতি জিরো টলারেন্সের নীতি প্রকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশ অহিংসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন ভারতের রাষ্ট্রদূত।

গান্ধীর অহিংসা নীতি বিশ্বের বরেণ্য নেতাদেরও অনুসরণীয় ছিলো জানিয়ে শ্রিংলা বলেন,‘মার্টিন লুথার কিং, সাউথ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা গান্ধী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অহিংসার পথে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।’

বর্তমান পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে গান্ধীর আদর্শ-দর্শনের দৃষ্টান্ত হিসেবে ভারতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্না হাজারের প্রতিবাদের উদাহরণ দেন ভারতের হাইকমিশনার।

বিকেল ৪ টায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে…” এবং মহাত্মা গান্ধীর প্রিয় ভজন সংগীত “রঘুপতি রাঘব রাজারাম” গান পরিবেশনের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভার সঞ্চালনা করেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আলোচনা সভার শুরুতেই একুশে পদক এবং ভারতের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত ঝর্ণা ধারা চৌধুরী, লেখক-কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদকে গান্ধী দর্শন চর্চার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদিপ্ত মুখার্জী, ঢাকা ট্রিবিউনের প্রকাশক কাজী আনিস, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. সামিয়া হক, ব্যারিস্টার রিজওয়ানা ইউসুফ, সংগীত শিল্পী এবং গান্ধীর দর্শনের ভক্ত এলিটা করীম প্রমুখ।