বৃহস্পতির চারপাশে কক্ষপথ তৈরির পর প্রথম ছবি পাঠিয়েছে মহাকাশযান ‘জুনো’। এখনো গ্রহটির আরও অনেক কাছে যাওয়া বাকি থাকলেও এরই মধ্যে ছবি পাঠানো শুরু করে দিয়েছে বিশেষভাবে নির্মিত স্যাটেলাইটটি।
দানবগ্রহ বৃহস্পতির কাছে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছানোর ৬ দিন পর প্রথম এর দৃশ্যমান আলোর ছবি তুলতে সক্ষম ‘জুনোক্যাম’ নামের ক্যামেরাটি চালু করা হয়। এই ক্যামেরা দিয়েই তোলা হয় ছবি।
জুনোক্যাম দিয়ে প্রথম ছবিটি তোলা হয় ১০ জুলাই গ্রিনিচ মান সময় বিকেল সাড়ে ৫টায়। ওই সময় জুনো বৃহস্পতি থেকে ২৭ লাখ মাইল দূরত্বে, উপবৃত্তাকার কক্ষপথের দূরতম অংশে অবস্থান করছিল।
জুনোর পাঠানো সেই প্রথম ছবিতে বৃহস্পতির আলোকিত অর্ধেক অংশ ফুটে ওঠে। ‘গ্রেট রেড স্পট’ বা বৃহস্পতির বিখ্যাত বিশাল লাল দাগসহ গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো ধরা পড়ে সেই ছবিতে।
এছাড়াও এর চার বৃহত্তম চাঁদের তিনটি – আইও, ইউরোপা এবং গ্যানিমিডকেও ছবিতে উঁকি দিতে দেখা যায়।
স্যান অ্যান্টোনিওতে অবস্থিত সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর প্রধান গবেষক স্কট বোল্টন বলেছেন, ‘জুনোক্যাম থেকে পাঠানো এই ছবি নির্দেশ করে, জুনো কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই বৃহস্পতির ভয়াবহ বিকিরণের মধ্য দিয়ে পার হতে পেরেছে এবং বৃহস্পতির আরও কাছে যেতে এটি তৈরি।’
সৌরজগতের বিস্ময় বৃহস্পতির দুই মেরুর প্রথম দর্শনের জন্য সবাই উদগ্রীব হয়ে আছেন বলেও জানান বোল্টন।
জুনোর কাছ থেকে হাই রেজ্যুলেশন বা উন্নতমানের ছবি হাতে পেতে নাসার এখনো বেশ কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ২৭ আগস্ট মহাকাশযানটি গ্রহটির চারপাশে তার কক্ষপথের সবচেয়ে কাছের অংশে থাকবে। তখনই প্রথম হাই রেজ্যুলেশন ছবিটি ফ্রেমবন্দি করবে জুনো।
কৃত্রিম উপগ্রহ ‘জুনো’ সৌরজগতের দানব গ্রহ বৃহস্পতির উদ্দেশ্যে ৫ বছর আগে ২০১১ সালের ৫ আগস্ট পৃথিবী ছেড়েছিল। এটিই বৃহস্পতিতে পাঠানো প্রথম সৌরশক্তি চালিত স্যাটেলাইট। এর আগে আর কোনো স্যাটেলাইট বৃহস্পতির এত কাছে যায়নি।
গত ৫ জুলাই বৃহস্পতির কক্ষপথে জুনোকে স্থাপনে সফল হয় যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আশা করা হচ্ছে, এটি বৃহস্পতির আরও নতুন কয়েকটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ আবিষ্কার করতে সফল হবে।