বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলারয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের করা আপিল শুনানির দিন পিছিয়ে আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
‘এত বড় মামলা লড়তে আরো প্রস্তুতি লাগবে’ বলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি দশ ট্রাক অস্ত্রের চোরাচালানের ঘটনায় দুই মামলার মধ্যে চোরচালান মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ মোট ১৪ জনের ফাঁসির রায় দেন চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান। এই ১৪ জনের মধ্যে এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবদুর রহীম এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াও রয়েছেন।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্ণফুলী নদী তীরে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সংরক্ষিত জেটিঘাটে দুটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খালাস করে ট্রাকে তোলার সময় পুলিশ তা আটক করে। পরে তদন্তে দেখা যায়, এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমুদ্রপথে আনা হয় ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’র জন্য। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওই চালান ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অস্ত্র উদ্ধারের পর ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগে একটি এবং ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে অন্য মামলাটি দায়ের করা হয়। এই দুই মামলায় আসামি ছিলেন মোট ৫২ জন, তাদের মধ্যে ৩৮ জনকে খালাস দেয় চট্টগ্রামের আদালত। চোরাচালান মামলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৪ আসামির ফাঁসির রায় আসে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে তাদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। আর অস্ত্র আইনের মামলায় ওই ১৪ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়া অস্ত্র আইনের মামলায় আরেক ধারায় এদের দেওয়া হয় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড।