ঢাকাই সিনেমার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নায়িকা মাহিয়া মাহি অভিনীত দুটি ছবি এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে। একটি ‘মনে রেখো’, অন্যটি ‘জান্নাত’।
হার্টবিট প্রডাকশনের ব্যানারে নির্মিত ‘মনে রেখো’ ৭০ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। আর মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘জান্নাত’ মুক্তি পেয়েছে আনুমানিক ২৩ সিনেমা হলে। মাহি অভিনীত এ দুই ছবির মধ্যে ভালো চলছে ‘মনে রেখো’। এই নায়িকা তার ঈদের ছবি নিয়ে কথা বলেছেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে।
ঈদে আপনার দুই ছবি মুক্তি পেয়েছে। ছবি দুটো দেখেছেন?
‘মনে রেখো’ দেখেছি। ‘জান্নাত’ এখনও দেখিনি। দু’য়েকদিনের মধ্যে সময় করে দেখে ফেলবো। অবশ্য যতদূর জেনেছি, ঢাকার মধ্যে ভালো মধ্যে ভালো হল পায়নি ‘জান্নাত’।
‘মনে রেখো’ কবে, কোথায় দেখেছেন?
শুক্রবার সনি সিনেমা হলে দেখেছি। একটা মজার ঘটনা শেয়ার করি। তিনটার শো দেখতে চেয়েছিলাম। হলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। গিয়ে দেখি শো শুরু হয়ে গেছে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার শো’তে আবার যাই। আমি, আমার মা, বন্ধু মিলে নয়জন গিয়েছিলাম। অপু (মাহির স্বামী) ছিল না। সে সিলেট আছে। আমি ছিলাম বোরকা পরা। প্রথম টিকেট গিয়ে হলে ঢুকে দেখি, ওমা আমরা নয়জন ছাড়া কেউ নেই! ভেবেছি আর কেউ আসবে না। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম! পরে অবশ্য সময় গড়ানোর সাথে সাথে দর্শক আসতে শুরু করে। ওই শো পরে হাউজফুল যায়। কিন্তু আমি যে সেখানে ছিলাম এটা কেউ টের পায়নি।
ছবি দেখার সময় দর্শকের প্রতিক্রিয়া কেমন লক্ষ্য করলেন?
দর্শক ‘মনে রেখো’ এনজয় করছে। তারা যখন আমাকে দেখে হাসছিল, আমার মনে হচ্ছিল; এটা কোনো হাসির কারণ হলো? আবার আমি যখন স্ক্রিনে আসি, সবাই তালি দেয় চিল্লাচিল্লি করে। এসব আমাকে অনেক খুশি করেছে। এসব দেখে আমি খুব মজা পেয়েছি। এটা আমি নিজে হলের মধ্যে বসে না থাকলে বুঝতাম না। আমার এতো ভালো লেগেছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
আমি যখন জাজ মাল্টিমিডিয়ায় কাজ করতাম, ২০১৩ সালে ‘পোড়ামন’ থেকেই শুনতাম আমার নাকি নারী ফ্যান বেশি। মেয়েরা আমাকে বেশি পছন্দ করে। আমি এটা ঠিক বুঝতাম না। সচরাচর মেয়েরা যখন সিনেমা দেখতে যায়, তখন একা যায় না। বয়ফ্রেন্ড, হাজবেন্ড নিয়ে যায়।
‘মনে রেখো’ দেখতে গিয়ে আমি বুঝলাম শতকরা নব্বইভাগ মেয়ে এসেছে ছবি দেখতে, সঙ্গে কোনো ছেলে নিয়ে। এটা আমাকে ভীষণ হ্যাপী করেছে। ছেলেরা যে আমাকে পছন্দ করে না, তা বলছি না। তবে মেয়েরা একটু বেশি বেশি পছন্দ করে এতদিন শুনেছি, এবার চোখে দেখলাম।
এছাড়া সব শ্রেণির দর্শক হলে এসে মনে রেখো দেখছেন। আমার ক্যারিয়ারে এই প্রথম নিজের ছবি এই প্রথমবার দেখে এত হেসেছি। হার্টবিট প্রডাকশনকে ধন্যবাদ জানাই। এতবড় এবং ভালো একটি ছবিতে আমাকে কাজের সুযোগ দেয়ার জন্য।
‘মনে রেখো’-তে কাজের আগে নিশ্চয় একটা প্রত্যাশা ছিল। সেটা কি পূরণ হয়েছে?
অদ্ভূত ভালো লাগার একটা ছবি ‘মনে রেখো’। ছবিটা দেখে বিশ্বাস হতে কষ্ট হয়েছে ‘আমিই এ ছবির নায়িকা’! মন থেকেই বলছি, ছবিটা দর্শক এত ভালোভাবে নেবেন তা আশা করিনি।
আমি যখন ডাবিং করি, তখনও বুঝিনি ‘মনে রেখো’ ছবিটা এত চমৎকার হতে যাচ্ছে। শুধু প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলবো না, যতটা আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি ভালো হয়েছে। আই ফিল সো প্রাউড ফর দিস প্রজেক্ট। আবার আমি ফিল করছি, চেষ্টা করলে আমি আরও ভালো ভালো ছবি করতে পারবো।
নতুন ছবির কাজ সিলেকশনের আগে আপনার কি আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত?
আমি একজন পেশাদার শিল্পী। বছরে একটা ছবি করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমার মনে হয়, যদি বছরে পাঁচটা সিনেমা করি, দেখা যাবে একটা খুব ভালো হয়েছে, আরেকটা মোটামুটি ভালো কিংবা এভারেজ হয়েছে। বাকিগুলো সেভাবে হলো না।
শাকিব খানের কথাই বলি। তিনি তো আমাদের দেশের অনেক বড় স্টার। তার সব ছবি কি দর্শক পছন্দ করছে? না। তাই বলে দর্শক কিছু না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে না। আমিও আমাদের দর্শকদের কষ্ট দিতে চাই না। তারা আমার ছবি দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাবে এটা আমি চাই না।