ধনী দেশগুলো সমাজের সবকিছু খুলে দিচ্ছে এবং করোনাভাইরাসের প্রবল ঝুঁকিতে না থাকা তরুণদেরও ভ্যাকসিন দিয়ে দিচ্ছে আর দরিদ্র দেশগুলো খুবই নৃশংসভাবে ভ্যাকসিন স্বল্পতায় ভুগছে। বিশ্বের এই ব্যর্থতায় নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন: আফ্রিকায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। সেখানে আগের এক সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৪০ শতাংশ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সর্বত্র। আমাদের বিশ্ব ব্যর্থ হচ্ছে, বৈশ্বিক সম্প্রদায় হিসেবে আমরাও ব্যর্থ হচ্ছি।
ইথিওপিয়ান নাগরিক টেড্রস স্বল্প আয়ের দেশগুলোর সাথে ভ্যাকসিন ডোজ ভাগাভাগি করতে অনীহার জন্য নাম উল্লেখ না করে বেশকিছু দেশকে তিরস্কার করেন। তিনি এটাকে এইচআইভি/এইডস সংকটের সঙ্গে তুলনা করেন, সেই সময়ে কেউ কেউ বলেছিল আফ্রিকান দেশগুলো এর জটিল চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে না।
টেড্রস বলেন: অতীতে এমন মনোভাব থাকতে পারে। কিন্তু বর্তমানে সমস্যা হচ্ছে সরবরাহের সমস্যা। আমাদের শুধু ভ্যাকসিন দিন।
তিনি বলেন: আছে নাকি নাই, এই দুইয়ের পার্থক্য এখন আমাদের বিশ্বের অন্যায়, অবিচার, বৈষম্যকে পুরোপুরি প্রকাশ করে দিচ্ছে, আসুন আমরা এর মুখোমুখি হই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘প্রধান জরুরি অবস্থা বিশেষজ্ঞ’ মাইক রায়ান বলেন: কলেরা থেকে শুরু করে পোলিও রোগের সময়ে দেখা গেছে শিল্পোন্নত দেশের তুলনায় অনেক উন্নয়নশীল দেশ গণ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে বেশ ভালো করেছে। স্বৈরশাসনের কোন পর্যায়ে গেলে, ঔপনিবেশিক মনোভাবের কোন পর্যায়ে আমরা বলতে পারি যে, আমরা আপনাকে কিছু দিতে পারবো না; কারণ আমাদের ভয় আপনি তা ব্যবহার করবেন না। সত্যি কি এমনটা বলা যায় এই মহামারির মাঝে?
ভ্যাকসিন জোট গাভি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালিত কোভ্যাক্স বিশ্বের ১৩২টি দেশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ বিতরণ করেছে, কিন্তু ভারত ভ্যাকসিন সরবরাহ বাতিল করে দেওয়ার পর প্রবল সংকটে পড়ে তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিনিয়র অ্যাডভাইজার ব্রুস অ্যাইলওয়ার্ড বলেন: আমাদের কাছে এখন অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া, জনসন অ্যান্ড জনসনের কোনো ভ্যাকসিন নেই। বর্তমানে পরিস্থিতি খুব ভয়ানক।