রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান ও সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আদালতে মৃত্যুদণ্ডের এই সিদ্ধান্ত সশস্ত্রবাহিনীর জন্য অত্যন্ত কষ্টকর ও বেদনাদায়ক।
মঙ্গলবার রায়ের পর রাওয়ালপিন্ডি সেনা সদর দপ্তরে শীর্ষ কর্মকতাদের বৈঠক শেষে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর এক বিবৃতিতে আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিবাদ জানান।
ওই রায়ের বিপক্ষে সামরিক বাহিনীর অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, একজন সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট যিনি ৪০ বছর দেশের সেবা করেছেন, দেশের সুরক্ষা দিতে যুদ্ধে লড়েছেন, তিনি কোনোভাবেই দেশদ্রোহী হতে পারেন না।
আইএসপিআরের অফিশিয়াল টুইটারে দেয়া বিবৃতিতে আসিফ গফুর অভিযোগ করেন, পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলার বিচারে তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। সংবিধান অনুসারে বিশেষ আদালতের নিয়মাবলী মানা হয়নি, বিবাদীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এমনকি এই মামলার জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে দেশের সংবিধান অনুসারে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।
Statement on decision by Special court about General Pervez Musharraf, Retired. pic.twitter.com/C9UAMT1E4W
— DG ISPR (@OfficialDGISPR) December 17, 2019
মঙ্গলবার পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা ঘোষণার দায়ে পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছিল।
২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হলে সে বছরই তার বিরুদ্ধে সব তথ্য-প্রমাণ বিশেষ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ দিলে মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ার পর পেশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার শেঠের নেতৃত্বে বিশেষ আদালতের গত ১৯ নভেম্বর এ মামলার শুনানি শেষ করেন। পরে মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন আদালত।
পারভেজ মোশাররফ ২০১৬ সাল থেকে দুবাইয়ে বসবাস করছেন। তবে তার দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তিনি হৃদযন্ত্রের সমস্যা এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণে অসুস্থ।