চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

থেমে আছে সুর, আফগানিস্তানের মিউজিক স্কুলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়

কাবুলের আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মিউজিক-এর দরজা বন্ধ। স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং ফ্যাকাল্টিরা বাড়িতে। প্রাণভয়ে কাটছে এক একটি দিন। মিউজিক স্কুলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়।

মিউজিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আহমাদ সারমাস্ত অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম এনপিআর-এ দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘অস্ত্রধারীরা স্কুলে ঢুকে পড়েছে। স্কুলের গাড়ি চুরির চেষ্টা করেছে। বাদ্যযন্ত্রগুলো ভেঙে ফেলেছে।’

১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালিবান শাসনামলে সংগীত ছিল নিষিদ্ধ। গান করা, গান শোনা, বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করায় ছিল নিষেধাজ্ঞা। অমান্য করলে কঠোর শাস্তি দেয়া হতো। আর তাই মিউজিক স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আবারও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সারমাস্ত আরও বলেন, ‘সব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কাবুলে সব দ্রুত বদলে যাচ্ছে।’

মিউজিক স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী তাদের বাদ্যযন্ত্র বাড়িতে নিয়ে আসেনি ভয়ে, এমনটাই জানান সারমাস্ত। কারণ তালেবানরা ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি চালাতে পারে। ঘরে বাদ্যযন্ত্র পেলে সমস্যায় পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব মিউজিক মার্চেন্টস এর আর্থিক সহায়তায় আফগানিস্তানের মিউজিক স্কুলটি খোলা হয়েছিল ২০১০ সালে। ছেলে ও মেয়েরা একই ক্লাসরুমে মিউজিক শিখে। শেখানো হয় আফগানিস্তানের মিউজিক এবং ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল।

আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মিউজিক-এর সফলতার গল্প অনেক। একাধিক শিক্ষার্থী বিশ্বের নানা যায়গায় পারফর্ম করেছে। আফগানিস্তানের সংগীতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে বিশ্বকে।

আফগানিস্তানে সংগীত চর্চা করা খুবই ঝুঁকির ব্যাপার। বছরের পর বছর ধরে মিউজিসিয়ানদের হুমকি দেয়া হয়েছে, অপহরণ করা হয়েছে, মেরে ফেলা হয়েছে। ২০১৪ সালে আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মিউজিকের একটি কনসার্টে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছি। দুইজনের মৃত্যু হয়েছিল, অনেকেই আহত হয়েছিলেন। প্রাণে বেঁচে গেলেও অনেকদিনের জন্য শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়েছিলেন সারমাস্ত। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে অপারেশনের মাধ্যমে বোমার স্প্রিন্টার সরাতে হয়েছিল। তবে সৌভাগ্যক্রমে কোনো শিক্ষার্থী নিহত কিংবা আহত হয়নি। তবে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল সবাই।

সারমাস্তের মতে, তালিবানরা এবার মানবাধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে তা মনে হচ্ছে না। সংস্কৃতি একটি দেশের শক্তি। সংস্কৃতি চর্চা ছাড়া দেশ অসম্পূর্ণ।