বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আজ ৯০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হলো। তিনি শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামে তার সহযোদ্ধা, বিশ্বস্ত সহচর। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার লড়াইয়ে প্রচারের আড়ালে থেকে নিজেকে সাহসের প্রতীক করে তুলেছিলেন।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আজ বেঁচে থাকলে তার সাহসী নেতৃত্ব আর দূরদর্শিতায় নিঃসন্দেহে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, সেই সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। কেননা ঘাতকরা জানতো, শুধু বঙ্গবন্ধুকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলে হবে না, তার সাথে ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকেও সরিয়ে দিতে হবে। এর কারণটাও ছিল স্পষ্ট, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যে শূন্যতা তৈরি হতো, তা পূরণ করার যোগ্যতা-মনোবল, মেধা-সাহস আর ধৈর্য সবই বঙ্গমাতার মধ্যে ছিল। তাইতো নির্মম প্রতিহিংসার শিকার হতে হয় তাকেও।
তবে এই মহীয়সী নারী আজ সশরীরে না থাকলেও তার আদর্শ ও দৃষ্টান্ত আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা বিশাল উৎস। জাতির পিতা কয়েক দফায় দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর কারাগারের প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে নিজ পরিবারের প্রতিটি সদস্যের প্রতি দায়িত্ব পালন করে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। এমনকি দেশ স্বাধীনের পরও আমৃত্যু দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
তাই তিনি সব সময়ই মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। বিশেষ করে বাঙালি নারীদের কাছে। তিনি দেখিয়েছেন, দৃঢ় মনোবল আর অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে সংসারের পাশাপাশি দেশ ও দেশের মানুষের জন্যও অকৃত্রিমভাবে কাজ করা যায়। সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে থেকে উৎসর্গ করা যায় নিজেকে।
আমরা মনে করি, বঙ্গমাতা জাতির জন্য যে ত্যাগ আর কষ্ট স্বীকার করেছেন তা চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। তিনি বেঁচে থাকবেন তার কর্মের মাঝে।