কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হয়েছে মুসলিম বিশ্বে।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশেও আজ মঙ্গলবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ও কর্মসূচিতে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করেছে।
পবিত্র এই দিন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে নানা ধরণের আয়োজন ও ইবাদতের মাধ্যমে দিনটি কাটিয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এই দিনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের অতিরঞ্জিত কার্যকলাপ হয়নি। এর আগে এই দিবসে দেশে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে, তারপর থেকে নানা ধরণের আশঙ্কাও বিরাজ করে প্রতিবছর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেজন্য প্রতিবছর সতর্ক পদক্ষেপ ও নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে, এবছরও শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে পবিত্র আশুরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। রাজধানীর বড় কাটারা ইমামবাড়া, খোজা শিয়া ইসনুসারী ইমামবাড়া এবং বিবিকা রওজায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রত্যেক দর্শনার্থীর দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হয়েছে। মিছিলে ব্যাগ, পোটলা, টিফিন ক্যারিয়ার বহন করা যায়নি। তাজিয়া মিছিলে ঢোল বাজিয়ে দা, ছুরি, তলোয়ার ও লাঠিখেলা নিষিদ্ধ ছিল। পুলিশের এইসব জননিরাপত্তার স্বার্থে গৃহীত পদক্ষেপ সকলে মেনে নেয়াতে এবারের আশুরা যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। মাঝখানে বৃষ্টিও অনেকটা স্বস্থি দিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে জনগনের সজাগ দৃষ্টি ছিল বলে সব পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে সামাল দেয়া সম্ভব হয়েছে।
ফোরাত নদীর তীরের সেই শোকাবহ ঘটনা সর্বোচ্চ ত্যাগের শিক্ষা আমাদের জীবনকে আলোকিত করুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।