চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ত্বকের ক্যান্সার কেন হয়, প্রতিরোধের উপায় কী?

সূর্যের আলোতে থাকে ইউভি এ, ইউভি বি এবং ইউভি সি নামক তিন ধরনের ক্ষতিকর রশ্মি। এরমধ্যে ইউভি এ এবং ইউভি বি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে এবং মানুষ ও প্রাণীজগতের ক্ষতি করে। বিশেষ করে মানুষের ত্বকের নানা সমস্যার জন্য অন্যতম একটি কারণ এই ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি।

বিগত কয়েক দশক ধরে পৃথিবীতে স্কিন ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ত্বকের এ ক্যান্সারের সাথে কি তাহলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কোনো সর্ম্পক আছে? গবেষণার ফলাফল তো সেদিকেই ইঙ্গিত দেয়।

ত্বকের ক্যান্সারকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মেলানোমা এবং ননমেলানোমা ক্যান্সার। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিবছর ২ থেকে ৩ মিলিয়ন ননমেলানোমা এবং প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার মেলানোমা ত্বকের ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী ঘটে।

ননমেলানোমা ত্বকের ক্যান্সারগুলো শরীরের এমন অংশগুলোতে হয় যেগুলো সাধারণত সরাসরি সূর্যের সংস্পর্শে আসে। যেমন: কান, মুখ, ঘাড় এবং বাহু। এতে স্পষ্ট হয় যে, উচ্চ মাত্রার ইউভি বিকিরণের জন্য এই ক্যান্সার হয়।

অন্যদিকে মেলানোমা ক্যান্সারেরও একটি অন্যতম কারণ সূর্যের এই ক্ষতিকর রশ্মি। মেলানোমা ক্যান্সার সাধারণত ফ্যাকাশে বর্ণ, লাল বা সাদা চুল এবং নীল চোখের অধিকারীদের বেশি হয়ে থাকে। এর কারণ হচ্ছে এসব বৈশিষ্টের লোকদের শরীরে ম্যালানিনের পরিমাণ কম থাকে। আর এই ম্যালানিন আমাদের শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে।তাহলে বলা যায়, ত্বকের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ সূর্যের এই ক্ষতিকর রশ্মি।

আমরা সবাই জানি, প্রতিকার থেকে প্রতিরোধই উত্তম। আর তাই সূর্যের এই ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষার জন্য আবিষ্কৃত হয়েছে সানস্ক্রিন। দিনের যেই সময়টুকুতে ইউভি সূচক সর্বোচ্চ থাকে তখন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের আগের প্রজন্মের যারা ছিল তারা তো সানস্ক্রিন ব্যবহার করেনি। তাহলে তাদের সময়ে তো এই ধরনের ত্বকের ক্যান্সারের প্রবণতা চোখে পড়ার মত ছিল না। এর পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে গ্রিনহাউজ ইফেক্ট, পরিবেশ দূষণ এবং পৃথিবীতে থাকা বিভিন্ন রাসায়ণিক পদার্থের জন্য ওজন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, পৃথিবীতে অতিরিক্ত মাত্রায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি প্রবেশ করছে। এই ওজন স্তর পৃথিবীর জন্য একটি ছাদের মত কাজ করে, যার ফলে পৃথিবীতে ক্ষতিকর রশ্মি গুলো প্রবেশ করতে পারে না। তখন পৃথিবীতে দূষণের মাত্রা কম ছিল বলে তখনকার মানুষের এত সমস্যা হয়নি।

বিজ্ঞানীদের মতে, ১৯৯০ সালের পর থেকে বিগত দশকগুলোর তুলনায় তিনগুণ বেশি ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করছে শুধুমাত্র ওজন স্তর ধ্বংসের ফলে।

তাই প্রত্যেকের উচিত এখনই সচেতন হওয়া। একদিকে যেমন ওজন স্তর ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য পরিবেশ দূষণ কমাতে হবে, অপরদিকে ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।