চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

তুরিন আফরোজের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তার মা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিটর তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে বাড়ি দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে তার মা সামসুন নাহার তসলিম প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়ের বিষয়ে কথা বলেন মা। এসময় মায়ের পাশে ছিলেন তুরিনের ভাই শাহনেওয়াজ শিশির।

সংবাদ সম্মেলনে সামসুন নাহার তসলিম বলেন: আজ দুই বছর তিন মাস ১৯ দিন ধরে আমি আমার বাসার বাইরে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয় তুরিন। আমার দোষ তার (তুরিন আফরোজ) কিছু আচরণের প্রতিবাদ করা। যেমন, আমাদের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে সবসময় ভাড়ার টাকা আমিই নিতাম। আমার স্বামী অবসরে যাওয়ার পর থেকেই বাড়ি ভাড়ার টাকায় আমাদের সংসার ও ওষুধের খরচ চলতো। এরপর ওর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তুরিন বাসা ভাড়ার টাকা জোর করে নিয়ে নেয়। অপরিচিত লোকদের রাত-বিরাতে ঘরে প্রবেশ করানো নিয়ে দারোয়ান ও ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করলে তুরিনের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া লাগতো। এসব বিষয়ে নিষেধ করলে ৫৭ ধারায় গ্রেপ্তার করানোর ভয় দেখাতো।

সামসুন নাহার আরো বলেন: আমি তো ধারা বুঝি না। সে (তুরিন) আরও বলতো,‘পৃথিবীর যেখানেই থাকো সেখান থেকেই ধরে নিয়ে আসবো।’ আর তার গানম্যান দিয়ে ভয় দেখাতো। গ্রামের বাড়ি নীলফামারী যেতে পারি না। সে সেখানকার দায়িত্ব নিয়ে জমিজমা ও বাড়ি নিজের নামে কুক্ষিগত করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে ব্যর্থ হই। ভেবেছিলাম, তিনি একজন মা। ওনার ঘরে এমন হলে উনি কী করতেন? আমরা জানি, উনি অন্যায়-অবিচারকে প্রশ্রয় দেবেন না। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।’

আমি আজ মিডিয়ার মাধ্যমে ওনার সহযোগিতা কামনা করছি। আমার শরীর ভীষণ খারাপ। ৬৫ শতাংশ কিডনি অকেজো। সঙ্গে আবার ডায়াবেটিস আছে। ওষুধ কেনার পয়সা বাড়িভাড়া থেকে পেতাম, সেটাও সে কেড়ে নিয়েছে। দেশে থাকার জায়গা নেই। এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াই। আমি আমার দেশ ছেড়ে এ বয়সে কেন বিদেশে পড়ে থাকবো? এ দেশ আমার জন্মস্থান ও আমার ৪৮ বছরের সংসার। আমি তো এখানেই থাকতে চাই। আমি আমার সংসারে ফিরে যেতে চাই। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ভাই শাহনেওয়াজ শিশির বলেন, ‘ক্ষমতার দাপটে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আমাকে এবং আমার বিধবা মাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানি করে আসছে। তার কারণ একটিই, তা হলো দেশে আমাদের সম্পদ কুক্ষিগত করা। চক্ষু লজ্জায় এতদিন বিষয়টি আড়াল করে রেখেছি। আমি ও আমার মা ক্ষমতাসীন কাউকে অবমাননা করতে চাইনি। একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে বাসা থেকে আমাদের বের করে দেয়ার পরও রাজউকের কর ও ভূমি কর আমি নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছি। অথচ আমার অনুপস্থিতিতে তুরিন আফরোজ ক্ষমতার দাপট ও প্রশাসনকে সংবিধানবহির্ভূত কাজে বাধ্য করে আমাকে আর আমার মার ক্ষতি করছে। ব্যারিস্টার তুরিন শুধু ঢাকাতেই নয়, নীলফামারীতে আমাদের চাচাতো ভাইবোনদের জমিজমাও জিম্মি করে রেখেছে।’