সেনাবাহিনীর নারী সদস্যদের হিজাব পরার উপর তুরস্কে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার। দীর্ঘদিন ধরে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের ধারক হিসাবে বিবেচনা করা হতো তুরস্কের সেনাবাহিনীকে। সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীই ছিল দেশটির একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে এই নিষেধাজ্ঞা এতদিন কার্যকর ছিল।
তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট গত দশ বছরে দেশটির স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক প্রতিষ্ঠান থেকে হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক দেশটির সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষেধ বলে সংবিধানে উল্লেখ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত এক দশকে তুরস্কের রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছেন। ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার অধিকারীরা দেশটিতে ক্রমশই একঘরে হয়ে পড়ছেন বলে অনেকের মত।
এরদোয়ান আগেই জানিয়েছিলেন, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি অফিস, আদালত, পুলিশ বাহিনী সব জায়গাতেই হিজাব পরা যাবে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় একমাত্র ছিল সেনাবাহিনী। এখন সরকার রায় দিল সেনাবাহিনীর নারী সদস্যদেরও এখন থেকে হিজাব পরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।
সবার উপর ইসলামী এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া এবং ধর্মকে ব্যবহার করে সমর্থনের ভিত্তি গড়ে তুলার চেষ্টা করছেন এরদোয়ান, সমালোচকদের দাবি এমনই। তাদের অভিযোগ এরদোয়ান গত কয়েক বছরে তুরস্কের বহু সরকারি স্কুলকে ধর্মভিত্তিক স্কুলে পরিণত করেছেন এবং ধর্মপ্রাণ প্রজন্ম গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন।
তুরস্কের ইতিহাসে ধর্ম ও ধর্মনিরেপক্ষতার মধ্যে বিভেদ বহুদিনের। এই বিভেদ এখন আরও গভীর হচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা বলছেন।