চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘তীব্র ক্ষুধাপীড়িত’, তবে উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ

বিশ্ব ক্ষুধা সূচক- ২০১৯

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান গত বছরের চেয়ে কিছুটা নিচে নেমে গেছে। ২০১৯ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮, যা গত বছরের চেয়ে আরও ২ ধাপ পিছিয়ে।

তবে আপাতদৃষ্টিতে অবস্থানের সামান্য অবনতি হলেও এই সূচক অনুসারে সার্বিকভাবে উন্নতির দিকেই রয়েছে বাংলাদেশ।

পৃথিবীর দেশগুলোর কোনটির জনগণ কতটা খাদ্যাভাব অর্থাৎ ক্ষুধায় পীড়িত তা তুলে ধরে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স। এই সূচকে ০ থেকে ১০০ পয়েন্টের স্কেলে দেশগুলোকে ফেলে যাচাই করা হয় কোন দেশটি কতটা ক্ষুধাপীড়িত।

এই স্কেলে ০ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো স্কোর, যার অর্থ সেই দেশটিতে ক্ষুধা নেই, আর ১০০ হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। ১০ এর কম স্কোর পাওয়ার অর্থ হলো সেই দেশে ক্ষুধাক্লিষ্টতা কম। ২০ থেকে ৩৪.৯ স্কোরের অর্থ তীব্র ক্ষুধা, ৩৫ থেকে ৪৯.৯ অর্থ ভীতিকর ক্ষুধা আর ৫০ বা তার বেশি স্কোর বলতে বোঝায় চরমভাবে ভীতিকর। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ

এই স্কেলে চলতি বছরের সূচকে মোট ১১৭টি দেশের মধ্যে ২৫.৮ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ দেশটি তীব্র ক্ষুধাপীড়িত।

এ বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (জিএইচআই) হিসাব করা হয়েছে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একেকটি দেশের পুষ্টিহীনতার শিকার শিশুর সংখ্যার অনুপাত, পাঁচ বছরের কম বয়সী যেসব শিশুর উচ্চতার তুলনায় ওজন কম বা বয়সের তুলনায় উচ্চতা অপর্যাপ্ত এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহারের অনুপাতের ওপর ভিত্তি করে।বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ

সেই হিসাব থেকে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে ১১৭ দেশের মধ্যে ৮৬, ২০১৬ সালে ১১৮ দেশের মধ্যে ৯০, ২০১৭’তে ১১৯ দেশের মধ্যে ৮৮ এবং ২০১৮ সালে ১১৯টি দেশের মধ্যেই ৮৬তম হয়েছিল।

চলতি বছরসহ ৫ বছরে অবস্থানে খুব সামান্য তারতম্য হলেও দীর্ঘমেয়াদী চিত্রে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রমোন্নতি। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০’র মধ্যে ৩৬.১, অর্থাৎ ‘ভীতিকর’। এর ৫ বছর পর, ২০০৫ সালের সূচকে সেই স্কোর কমে ৩০.৭-এ দাঁড়ায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ ‘ভীতিকর’ থেকে ‘তীব্র’ ক্ষুধাপীড়িত দেশের পর্যায়ে চলে আসে।বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ

আরও ৫ বছর পর অর্থাৎ ২০১০ সালে স্কোর সামান্য একটু কমে ৩০.৩ হয়। আর তারপর টানা ৯ বছরের ব্যবধানে এবারের সূচকে বাংলাদেশ পেল ২৫.৮, যা লক্ষণীয়ভাবেই একটি ধারাবাহিক উন্নতি।

বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত ১০২, পাকিস্তান ৯৪, নেপাল ৭৩, মিয়ানমার ৬৯ এবং শ্রীলঙ্কা ৬৬তম অবস্থানে রয়েছে। ভুটানের স্কোর নির্ণয়ের মতো পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জিএইচআই’র ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।