সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জন্মভূমি কুড়িগ্রামের
মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি। সরকারি কলেজ মাঠে নামাজে জানাযা শেষে
এই কলেজ চত্বরেই লেখককে দাফন করা হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরেই ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে সৈয়দ হকের মরদেহ গুলশানে তার বাসভবনে নেওয়া হয়। পরে মরদেহের গোসল শেষে আবারো হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।
বুধবার সকাল ১০টায় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে সৈয়দ হকের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় নামাজে জানাযা সকাল পৌনে ১১টায় বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সব্যসাচী লেখকের মরদেহ সকাল ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আরেকটি জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সৈয়দ হকের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের পাশে ধান ক্ষেতসংলগ্ন জমিতে কবরের ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন কবি। সেখানে তিন শতক জমি মাটি ভরাট করে তাকে কবর দেয়া হবে।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যু খবরে শোকের ছায়া পড়েছে তার জন্মভুমি কুড়িগ্রামেও। পুরাতন থানা পাড়ায় কবির পৈত্রিক বাড়িটি শোকে নিথর। কৃতি সন্তানকে হারিয়ে জেলার সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও চলছে শোক।
প্রিয় কবিকে শেষ বিদায় জানাতে প্রস্তুত কুড়িগ্রাম। সেখানে জানাযা শেষে কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবে স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। সরকারি কলেজ চত্বরে কবির দাফনের প্রস্ততি চলছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে কাজ করছে কুড়িগ্রাম পৌরসভা।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।
লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে চার মাস চিকিৎসার পর ২ সেপ্টেম্বর সৈয়দ শামসুল হক দেশে ফেরেন। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে তিনি লন্ডনে যান। সেখানে পরীক্ষার পর তার ক্যানসার ধরা পড়ে। দেশে ফেরার পর তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে লেখক দুই সন্তানের জনক। জীবনসঙ্গী মনোরোগের চিকিৎসক ও লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
লেখকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ উপন্যাস অবলম্বনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘গেরিলা’ সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল।