এক যুগ আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাসমালিক পক্ষ ও বাদীপক্ষের করা আপিল সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি শুরু হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগে বুধবার এই শুনানি শুরু হয়। আজ বাস মালিকপক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। অন্যদিকে বাদীপক্ষে শুনানি করবেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের সঙ্গে নিহত হন মাইক্রোবাসের চালক মোস্তাফিজুর রহমান, প্রোডাকশন সহকারী ওয়াসিম হোসেন ও জামাল হোসেন। আহত হন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, শিল্পী ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দিলারা বেগম জলি। তারা কাগজের ফুল ছবির জন্য শুটিং স্পট দেখে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন।
এই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় মামলা করে। ঘটনার প্রায় ছয় বছর পর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অধস্তন আদালতের রায়ে বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় বাসচালক ২০২০ সালের ১ আগস্ট মারা যান।
দুর্ঘটনার পর ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের পরিবার মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালতে মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাসমালিক, চালক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পৃথক মামলা করে। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দুটি পরে হাইকোর্টে বদলি হয়। এর মধ্যে তারেক মাসুদের পরিবারের করা মামলায় ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণ দিতে রায় দেন। রায়ে তারেক মাসুদের পরিবারকে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। তবে হাইকোর্টের রায়ের পর বাসমালিকপক্ষ ও বাদীপক্ষ ২০১৯ সালে আপিল বিভাগে আপিল করে।
অন্যদিকে, মিশুক মুনীরের পরিবারের করা ক্ষতিপূরণ মামলাটি এখন হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।