৪ বলে ২ রানের অপরাজিত ইনিংস। রান কিংবা বলের হিসাবের বাইরেও যে বীরত্বগাথা রচনা করা যায় এই ইনিংসের মাধ্যমে তারই অনন্য নজির দেখিয়েছেন তামিম ইকবাল। এক হাতে ব্যাট করে হৃদয় জয় করে নিয়েছেন সবার। চোট নিয়েও দেশের প্রয়োজনে ব্যাটিং করার বীরোচিত সিদ্ধান্তের জন্য তামিমকে মনে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বড় ভাই নাফীস ইকবাল।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে নাফীস বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সবাইকে অনুরোধ করবো এই জিনিসটা যাতে মনে রাখে। এখন সবাই প্রশংসা করছে হয়তো দুদিন পর মানুষ তাকে নিয়ে অন্যরকম মন্তব্য করতে পারে। ভাই হিসেবে আমি গর্বিত, দেশকে সে গর্বিত করেছে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবেও আমি গর্বিত। তাকে এই কাজের জন্য যেন সবাই মনে রাখে।’
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রানের ক্ষুধা বেড়েছে তামিমের। তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক তিনি। ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। ডান হাতের আঙুলে চোট নিয়েই এশিয়া কাপ খেলতে যান দুবাই। প্রথম ম্যাচেই চোট পান ডানহাতে। যেতে হয় হাসপাতালে। ব্যাট ধরার অবস্থায় না থাকলেও সবাইকে বিস্ময়ে ডুবিয়ে দেশের প্রয়োজনে নেমে যান ২২ গজে।
ঝুঁকি নিয়ে এ ওপেনার মাঠে নামায় যোগ হয় আরও ৩২ রান। যার পুরোটাই আসে মুশফিকের ব্যাটে। তামিম খেলেন একটি বল। ওই ঘটনায় টাইগার বোলাররা হয়ে ওঠেন উজ্জীবিত। ২৬১ রানের পুঁজি নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ।
ছোট ভাইয়ের সাহসিকতা দেখে আবেগে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামের বাসায় বসে খেলা দেখতে থাকা নাফীস। তিনি নিজেও ক্রিকেটার। বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন ১১টি টেস্ট ও ১৬ ওয়ানডে। তামিমের আবেগ উপলব্ধি করতে পেরেছেন হাজার মাইল দূরে থেকেও।
ফর্মের তুঙ্গে থেকেও ক্যারিয়ারের দিকে না তাকিয়ে যে ঝুঁকি নিয়েছেন ছোট ভাই তামিম, তা দেশের ভবিষ্যৎ ক্রিকেটারদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করছেন নাফীস।
‘ওর যখন ইনজুরি হয়েছে আমি খুবই আপসেট ছিলাম। শেষ সিরিজে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এত ভাল খেলেছে, ভাল যাচ্ছিল…যাই হোক এসব কারণে একটু আপসেট ছিলাম। হাতে একটু ব্যথা নিয়েই দুবাই গেল। তারপর যখন শুরুর ম্যাচেই আঘাত পেল আরও হতাশ হয়ে পড়লাম। কিন্তু তামিম যখন উইকেটে ফিরে আসল একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি খুবই অবাক হই। গ্লাভস পরতে পারছে না, যেভাবে ব্যাটিং করেছে আঘাত লাগতে পারতো। এটা অনেক প্রেরণাদায়ক একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য।’