অর্থমন্ত্রী দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে বিড়ি-সিগারেট দূর করার লক্ষ্যে তামাক-পণ্যের দাম বাড়ালেও প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘তামাক মহামারী’র বাজেট বলেছে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা এবং আত্মা।
তারা বলেছে: প্রস্তাবিত বাজেটে উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেট এবং ধোঁয়াবিহীন (গুল, জর্দ্দা) তামাকপণ্যে কর না বাড়ানোর প্রস্তাব চরম জনস্বাস্থ্যবিরোধী। গত একবছরে জনগণের মাথাপিছু আয় ৯.২৭ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে তারা বলেছে, এর সাথে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে তামাকপণ্যের মূল্য অপরিবর্তিত রাখার অর্থ ভোক্তার কাছে এগুলো আরো সহজলভ্য হয়ে যাবে, লাভবান হবে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি।
‘অন্যদিকে, সিগারেটের সর্বনিম্নস্তর ভেঙ্গে দেশী এবং আন্তর্জাতিক দুটি স্তরে বিভক্ত করে তামাক কর-কাঠামোর জটিলতা আরও বৃদ্ধি করা হলো। তামাকবিরোধীদের সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব গ্রহণ না করে করারোপের পুরনো ও জটিল এডভ্যালোরেম পদ্ধতিই বহাল রাখা হয়েছে। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি সহজ এবং কার্যকর তামাক কর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০১৬ সালে যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তারও বিন্দুমাত্র প্রতিফলন নেই এবারের বাজেট প্রস্তাবনায়।’
তারা বলেছে: প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় উৎপাদনকারী কোম্পানির নিম্ন মূল্যস্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ২৩ টাকার স্থলে ২৭ এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানির সিগারেটের দাম ৩৫ টাকা করা হয়েছে। দেশীয় কোম্পানির ক্ষেত্রে এই মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ১৭.৪ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রায় ৫২.২ শতাংশ। তবে এডভ্যালোরেম পদ্ধতি বহাল থাকায় এই দুটি পণ্যের মূল্য যতটুকু বাড়বে তার সিংহভাগই যাবে তামাক কোম্পানিগুলোর পকেটে।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠন দুটি বলেছে: বাংলাদেশে অর্ধেকেরও বেশি তামাক ব্যবহারকারী ধোঁয়াবিহীন তামাক (জর্দা ও গুল) সেবন করে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে এগুলোর উপর কর বাড়ানো হয়নি। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় আগামী ৩ বছরের মধ্যে বিড়ি উৎপাদন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু বিড়ির মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে এর তেমন কোনো প্রতিফলন নেই। কেননা, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বিড়ির মূল্য প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হলেও এবার মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ৪১.৩৮ শতাংশ।
ইলেকট্রনিক সিগারেটের ক্ষেত্রে অবশ্য অর্থমন্ত্রীর প্রশংসা করে তারা বলেছে:
বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক সিগারেটের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্যটির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে, প্রস্তাবিত বাজেটে ইলেকট্রনিক সিগারেট এবং এর রিফিল প্যাকের উপর ১০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। একইসাথে পণ্যদুটির আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে যা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।