তাজমহলকে ভারতের সংস্কৃতির ‘কলঙ্ক’ এবং ‘বিশ্বাসঘাতকেরা’ এটি নির্মাণ করেছিল বলে সমালোচনা করেছেন বিজেপির রাজনীতিবিদ সংগীত সোম। ভারতের উত্তর প্রদেশের পর্যটন দপ্তরের নতুন বুকলেটে তাজমহলকে না রাখায় বিতর্ক সৃষ্টির পর সোম এই আগুনে ঘি ঢাললেন।
বুকলেট থেকে তাজমহলকে বাদ দেয়া এবং সোম’র বক্তব্যের পর টুইটারে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে বলে জানায় বিবিসি।
আইন প্রণেতা সোম বলেছেন, ‘উত্তর প্রদেশের পর্যটনের বুকলেটে ঐতিহাসিক স্থানগুলোর তালিকা থেকে তাজমহলের নাম সরানোর পর অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কোন ইতিহাসের কথা বলছি আমরা? যে লোকটি তাজমহল বানিয়েছিল সে তার পিতাকে কারাবন্দি করেছিল।
‘সে যখন তাজমহল নিমাণ করছিল তখন উত্তর প্রদেশ এবং হিন্দুস্থানের অনেক হিন্দু তার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল, আপনারা কি এটাকে ইতিহাস বলবেন?’
স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার নিদর্শণ হিসেবে মুসলিম মুঘল সম্রাট শাহজাহান ১৬৪৩ সালে তাজমহল নির্মাণ করেন। ইতিহাস বলে, শাহজাহান তার পিতাকে বন্দী করেনি, তার পুত্র আওরঙ্গজেব তাকে বন্দী করেছিল।
তাজমহল নিয়ে সোম’র এ ধরণের মন্তব্যের পর আলোচনা সমালোচনা চলছে ভারতজুড়ে। যদিও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বক্তব্যের জন্যও এই আইনপ্রণেতা বেশ পরিচিত। ২০১৩ সালে উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ভূমিকার জন্য যে রাজনীতিকরা অভিযুক্ত সোম তাদের অন্যতম। ওই দাঙ্গায় ৬০ জনেরও বেশি নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
বিজেপির মুখপাত্র নালিন কোহলি সোমের এই বক্তব্য থেকে দলকে দূরে রেখেছেন। এনডিটিভি’কে তিনি বলেছেন, ‘সোম যা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত মত। তাজমহল ভারতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি অাশ্চর্যজনক ভারতের অংশ। ইতিহাসে যা ঘটেছে তা মুছে ফেলা যায়না, তবে এটি অন্তত ভালো লিখিত ইতিহাস হতে পারে।’
এর আগে গত জুনে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও তাজমহল ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে না বলে সমালোচনা করেছিলেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সোম’র বক্তব্য নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। তার বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে টুইটারে ঝড় বইছে।