তাইওয়ানে এবার জুতোর আকারে তৈরি হলো ১৬ মিটার উঁচু বিশাল কাঁচের এক ভবন। তবে জুতোর মতো দেখতে হলেও সেটি কোনো জুতোর দোকান বা শপিং মল নয়, ভবনটি একটি চার্চ!
৩২০টি নীল রঙের কাঁচের প্যানেল দিয়ে তৈরি চার্চটি দেখতে হুবহু মেয়েদের একপাটি হাই হিল জুতোর মতো। ১০ মিটার চওড়া ভবনটি তৈরি করতে প্রায় ৭ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে।
তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিমের চাইয়ি প্রদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় নির্মিত হয়েছে চার্চটি। নারীদের চার্চে যাওয়র আকর্ষণ তৈরি করতেই নাকি ভবনটির বিশেষ এই আকৃতি। তবে এই চার্চ নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য হলো পর্যটক আকৃষ্ট করা।
স্থানীয় প্রশাসনের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক প্যান সুই-পিং বিবিসিকে জানান, নিয়মিত কাজে ব্যবহার হবে না চার্চটি। শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্যই ভিন্ন ধরণের এই চার্চ তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
‘আমাদের পরিকল্পনা হলো, চার্চটিকে একটি সুখী, স্বর্গীয় এবং রোমান্টিক রূপ দেয়া। প্রতিটি মেয়েই কল্পনা করে তার বিয়েটা হবে কল্পনার মতোই সুন্দর,’ বলেন সুই-পিং।
ডিজনির কার্টুন ছবি সিনডেরেলার কাহিনীতে দেখা যায়, প্রধান চরিত্র সিনডেরেলা রাত বারোটার ঘণ্টা শুনে রাজপুত্রের কাছ থেকে দৌড়ে পালানোর সময় তার পা থেকে কাঁচের তৈরি এক পাটি জুতো খুলে পড়ে যায়। দেখলে মনে হবে সিনডেরেলার ওই জুতোর আদলেই যেনো বানানো হয়েছে চার্চ ভবনটি।
তাই অনেকেরই ধারণা, বিশেষ করে যেহেতু বিয়ের জন্যই ব্যবহৃত হবে চার্চটি, সুতরাং এর পেছনে একটাই উদ্দেশ্য। আর তা হলো অবিবাহিত নারীদের বোঝানো, ‘এখানে বিয়ে করে আত্মিক শান্তির কাঁচের জুতোটি খুঁজে নাও আর বাকি জীবনটা সুখে কাটাও!’
তবে বাস্তবে চার্চের এই জুতো-আকৃতির পেছনে রয়েছে ভিন্ন এক লোকগাঁথা। ১৯৬০-এর দশকে ওই এলাকার এক হতদরিদ্র পরিবারের এক মেয়ে ওয়্যাং ব্ল্যাকফুট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ায় তার দু’পা কেটে ফেলে দেয়া হয়। পা হারানোর কারণে ওয়্যাং’র বিয়েটাও ভেঙ্গে যায়। বাকিটা জীবন তিনি একা একটি চার্চেই কাটিয়ে দেন।
ওয়্যাং’র স্মৃতির সম্মানে জুতোর আদলে চার্চটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান চার্চের কর্মকর্তারা।
চার্চের সবচেয়ে ওপরতলায় রয়েছে স্পটলাইটসহ নীল রঙের একটি মঞ্চ। তার ওপরে খোলা আকাশ।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি চীনা নববর্ষের সময় সবার জন্য খুলে দেয়া হবে চার্চটি।