নবনিযুক্ত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ধারণার চেয়েও বেশি সমস্যা রয়েছে। সবার সাথে কথা বলে মনে হচ্ছে কানাগালির ভেতর আছি। টেলিকম বিভাগে ক্যান্সারের মতো সমস্যা বিরাজ করলেও এতদিন সমস্যা দূর করার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এসব সমস্যার সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন: একজন ডাক্তার যখন রোগীর রোগ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানবে, তখন চিকিৎসা করে রোগ সারানো সময়ের ব্যাপার। আমি এই খাতে কাজ করছি ৩০ বছর ধরে। আমি জানি কোথায় সমস্যা আছে। আমি কানাগলির শেষ দেয়ালটা ভেঙে দিতে চাই।
নিজের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন: আগামী একশ’ দিনের একটি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আমি প্রথমেই গুরুত্ব দিচ্ছি ইন্টারনেটের দাম কমানো এবং সবাইকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনার উপর।
‘‘ইন্টারনেট এখনও সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আসেনি। এটা বিটিআরসি’র ব্যর্থতা যে এখনও তারা ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারেনি। মোবাইল অপারেটরগুলো কম দামে ব্যান্ডউইথ কিনে সাধারণ মানুষের কাছে বেশি মূল্যে ডাটা বিক্রি করছে। তাদের এই কাজ করতে দেওয়া উচিত হবে না’’, বলেন মোস্তাফা জব্বার। এ বিষয়ে দ্রুতই বিটিআরসি’র সাথে বসবেন বলেও জানান তিনি।
ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশকে বদলে দেওয়া হবে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশ বদলে দেওয়ার জন্য সবকিছুই ডিজিটালাইজ করতে হবে। এজন্য আগামী এক বছর সংগ্রাম করে যাওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন: আমি চাই দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোই এখানে আধিপত্য করুক। দেশীয় প্রতিষ্ঠান থাকতে বিদেশি প্রতিষ্ঠান এখানে আধিপত্য করবে আমি এটা হতে দেবো না।
হার্ডওয়্যার খাত সম্পর্কে তিনি জানান: সরকার এ খাতকে গুরুত্বের সাথে দেখছে। দেশেই প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে কাঁচামাল আমদানির উপর শুল্ক নামিয়ে এক শতাংশ করা হয়েছে।
দেশের একটি ডেস্কটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন: আমি একটা প্রতিষ্ঠানের কথা জানি যারা ৫শ’ ডেস্কটপ দেশেই উৎপাদন করেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল তিন মাসে এগুলো বিক্রি করা। কিন্তু মাত্র একদিনেই তারা সেগুলো বিক্রি করতে সমর্থ হয়েছে।
নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর বিষয়ে এ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বলেন: মন্ত্রী হওয়ার জন্য আমার কোন লবিং ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি তার সম্মান রাখতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বেসিসের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার বলেন: আমি ইংরেজির বিরোধিতা করছি না, এরও প্রয়োজন আছে। বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হলে ইংরেজি লাগবে। কিন্তু দেশের ৯৬ ভাগ মানুষই ইংরেজি বোঝে না, তাদের জন্য তো বাংলা কন্টেন্ট প্রয়োজন।