২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকে ১৬টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করার অনুমতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত টাকা ফেরত দেওয়াও স্থগিত থাকবে।
এটর্নি জেনারেল বলেছেন, ওই সময় ব্যবসায়ীদের আয়কর রিটার্ন-এর কাগজপত্র দাখিল করতে তাকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭-২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১৬টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রায় সাতশ’ চার কোটি টাকা জমা দেয়।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ব্যবসায়ীদের পক্ষে ১১টি রিট আবেদন করা হলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এতে বিভিন্ন পে অর্ডারের মাধ্যমে নেওয়া অর্থ কেনো ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় রুল নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করলে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তাদের চাওয়ার বিপরীতে সামরিক বাহিনীর লোকজন তাদের থেকে নিয়েছিলো। এই হলো তাদের বক্তব্য। আর আমরা বলেছি, যেহেতু এসব অবৈধ অর্থ তাই তারা স্ব-ইচ্ছায় এসব সরকারকে দিয়েছে।
উভয়পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনের পর আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এটর্নি জেনারেল আরো বলেন, আদালত এই ১১টি মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন এই এগারোটি কোম্পানীর ওই সময়কার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়ার জন্য। ফলে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় ছিলো, তাদেরকে ফেরত দেওয়া হোক টাকা, সেটা স্থগিত হয়ে গেলো এবং আপিল বিভাগ কর্তৃক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই টাকা তারা পাবেন না। আপিল বিভাগ চূড়ান্ত শুনানিতে যে সিদ্ধান্ত দিবেন, সেটাই হবে।
এটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, আপিলের সার সংক্ষেপ ৬ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর দু’সপ্তাহের মধ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষের আইনজীবীদের সার সংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে।