শতবর্ষ উদযাপনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মডেল ক্যাম্পাসে রূপান্তর করা হবে মন্তব্য করে এমন একটি ক্যাম্পাস বিনিমার্ণে নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান।
বুধবার ভিসি কার্যালয়ে টিএসসি ভিত্তিক সকল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সকলের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
উপাচার্য বলেন: টিএসসি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র। বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি তথা ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র রয়েছে। এটিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল জ্ঞান চর্চা করে, মেধার বিকাশ ঘটায়, মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রাখে।
তিনি বলেন: টিএসসির সংগঠনগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করছে। এখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা আড্ডা-গল্পে মুক্তজ্ঞান চর্চা করবে। বাংলা সংস্কৃতির অগ্রততির জন্য কাজ করে যাবে। আমরা ছাত্রছাত্রীদের আরো বেশি টিএসসিমুখি করতে চাই।
‘সবধরনের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে হবে সুষ্ঠু নিয়মের ভেতরে থেকে। এজন্য দক্ষ ম্যানেজমেন্ট দরকার। সবার সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করা দরকার।’ টিএসসির সংগঠনগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের মাসিক বৈঠক করাকে গুরুত্ব দেন ভিসি।
এসময় তিনি টিএসসিতে মুক্তভাবে সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন: সংস্কৃতি চর্চায় বাধাধরা নিয়ম রাখা উচিত না। রাত ৮ টার মধ্যে টিএসসির সংগঠনগুলোর কার্যক্রম শেষ করতে হবে বলে যে নোটিশ দেয়া হয়েছিলো সেটিকে তিনি উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন: সেটি কোন আদেশ ছিলো না। মূলত আগের রাতে একটি সংগঠনের রুমে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার পর আমি টিএসসিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছিলাম। ৮টার কথা বলা হয়নি।
উপাচার্য বলেন: মেয়েদের হল পর্যন্ত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে, লাইব্রেরি চালু থাকে নয়টা-সাড়ে নয়টা পর্যন্ত। সেখানে টিএসসি ৮টায় বন্ধ হয়ে যাওয়া উদ্ভট ব্যাপার! উন্মাদ না হলে এমন কাজ কেউ করে না।
তিনি বলেন: টিএসসিতে সকল ধরনের সহশিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হবে। আমরা এজন্য আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করবো। টিএসসির কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ২০ তলা বিশিষ্ট টিএসসির বর্ধিত ভবন তৈরি করা হবে বলেও জানান উপাচার্য।
ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন: ২০২১ সালে শতবর্ষ পুর্তির আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মডেল ক্যাম্পাসে পরিণত করা হবে। এজন্য পুরো ক্যাম্পাসের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমি শিক্ষকদের বলেছি যেন ক্লাসে অন্তত দুই মিনিট পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করে কথা বলেন সবাই। ক্যাম্পাসের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক থাকবে। যিনি প্রতিদিন টহলের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন-কর্মীদের নির্দেশনা দিবেন।
এছাড়া ক্যাম্পাসে প্রবেশের পয়েন্টগুলোতে শীঘ্রই নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন এবং সপ্তাহের মধ্যে ফুলার রোডে মোটর বাইক বা গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণকারক তৈরি করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, টিএসসির পরিচালক এ এম এম মহীউজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত টিএসসি ভিত্তিক ২৩ টি সংগঠনসহ টিএসসিকেন্দ্রিক ২৮টি সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন এবং উপাচার্য প্রত্যেক সংগঠন থেকে একজন করে প্রতিনিধির বক্তব্য শোনেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মডেল ক্যাম্পাসে রূপান্তর করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানান টিএসসির সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা।