শাহবাগে নিজ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তের চাপাতির আঘাতে নৃশংস হত্যার শিকার আরেফিন ফয়সল দীপনের বাবা আবুল কাশেম ফজলুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই উগ্রবাদীদের আরেক শিকার লেখক ব্লগার অভিজিত রায়ের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। প্রথাবিরোধী, বিজ্ঞানমনষ্কদের হত্যার মিছিলে অভিজিত ও তার এক বইয়ের প্রকাশক দীপনের হত্যাকান্ডের মধ্যে সামঞ্জ্যসতা খুঁজে পাওয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে শনিবার নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছেন আরেফিন। উগ্রবাদীদের দৌরাত্মের ভয়াবহতার প্রকট আকারে উম্মোচিত হওয়ার আজকের দিনটিতে দুপুরে আরেক প্রকাশক শুদ্ধস্বরের আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজনের উপর একই কায়দায় হামলা হয়।
গত বইমেলায় লেখক ব্লগার অভিজিত রায়কেও সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সামনে অসংখ্য মানুষের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। হামলার সেই ঘটনায় আহত হয়েছিলেন অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। এই দম্পত্তির একজন কণ্যা সন্তান রয়েছে।
উগ্রবাদীদের চাপাতির আঘাতে নিহত প্রথাবিরোধী লেখক-ব্লগারদের ভীড়ে আরেফিন ফয়সাল ও অভিজিত রায়ের মধ্যে মুক্তমনার মানসিকতা ছাড়াও সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাওয়া যায় তাদের দুজনেরই বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এর মধ্যে ফয়সলের বোনও ঢাবির শিক্ষক।
মার্কিন প্রবাসী প্রকৌশলী, লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায়ের পিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের অবসার প্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. অজয় রায় একুশে পুরস্কার বিজয়ী। মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করার জন্য প্রখ্যাত এবং মুক্তচিন্তার অধিকারী ড. অজয় ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবোধের প্রচারক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হকের দুই সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে আরেফিন ছিলেন প্রকাশক। তিনি ব্লগার ছিলেন না। প্রকাশনার কাজকেই ভালোবেসেছিলেন এবং তেমন লাভজনক না হওয়া সত্ত্বেও এ কাজে নেশার মতোই লেগেছিলেন বলে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন।
দীপনের ঢাকা কলেজের সহপাঠি ‘সাপ্তাহিক’ এর সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা লিখেছেন, দীপন ব্লগার নয়, আমাদের বন্ধু দীপন প্রকাশক। লেখক -শিক্ষক আবুল কাশেম ফজলুল হকের সন্তান। দীপনের বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
একুশটিরও অধিক গ্রন্থের প্রণেতা জনাব ফজলুল হক নজরুল রচনাবলীর সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ও পত্র পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেন। বাংলাদেশের প্রধান মুক্তচিন্তক আহমদ শরীফের সৃষ্ট সংগঠন স্বদেশ চিন্তা সংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত।