বিশ্বে বসবাসের অনুপযোগী শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানীর বিষয়ে এমন দুঃসংবাদ দিয়েছে লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)।
তবে এর মধ্যে কিছুটা সুসংবাদও রয়েছে। এবার তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও গত বছর এ তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এই হিসেবে কিছুটা হলেও উন্নতি করেছে ঢাকা। তবে এমন ক্ষুদ্র উন্নতি কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
লন্ডনভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ১৪০টি শহরকে বাছাই করে বিভিন্ন বিষয়ের ভিত্তিতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক অবস্থান র্যাংকিং করেছে। শহরগুলোর রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা, অপরাধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে এই সূচক প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ১৪০টি শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ১৩৮তম। তালিকাটির সবচেয়ে শেষে অর্থাৎ ১৪০তম শহর হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার কাছাকাছি কেন আমাদের অবস্থান? এ বিষয়টি আমাদের নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখবেন কি?
তবে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যাবে, ঢাকা শহরের সমস্যার অন্ত নেই। সেসব সমস্যার সমাধান খুব সহজে হবে না, এটাও ঠিক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- ঢাকা কোনো একক প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনায় পরিচালিত হয় না। এজন্য সমস্যার দায়ও কেউ নিতে চায় না। এ কারণেই সমস্যাগুলো আরও জটিল আকার ধারণ করে।
এছাড়া ঢাকার মতো এমন জনবহুল শহর পৃথিবীতে খুব কমই আছে। এ শহরে কোনো একটা সাধারণ কাজের জন্যও সারাদেশের মানুষ ছুটে আসে। এখানে শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই ঢাকা কেন্দ্রিক। তাই বসবাসের অনুপযোগী হলেও এখানেই থাকতে হয় উপায়হীন মানুষগুলোকে।
ঢাকাকে বসবাসের উপযোগী করতে একেবারেই যে চেষ্টা হয়নি, বিষয়টা এমনও নয়। তবে সেই চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি বললেই চলে। যার সর্বশেষ প্রমাণ আমরা এবারের তালিকায় দেখেছি।
এই তালিকাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে চাইলে এখনও সম্ভব বলে আমরা মনে করি। কারণ, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন যেভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, তা আমাদের আশাবাদী করছে। তাই ঢাকার দুর্নাম ঘোঁচাতে এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।