পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন: ঢাকা আশা করছে যে র্যাপিড অ্যাকসন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করবে।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে, আমরা তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন।
ড. মোমেন বলেন, কিছু এনজিও অথবা মানবাধিকার সংস্থা প্ররোচণা দেয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটি দুর্ভাগ্যজনক যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পরামর্শ না করে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার পাশাপাশি মাদক পাচারের বিরুদ্ধে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নীতি হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তই ঠিক এমন নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই নিষেধাজ্ঞা ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ সরাসরি অব্যাহত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত মধুর’ হয়ে উঠছে।
ভারতের রাষ্ট্রপতির সফর সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, এটি একটি “উচ্চ অগ্রাধিকারের প্রতিফলন” যা ঢাকা ও নয়াদিল্লী উভয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাথে যুক্ত। তিনি বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতির সফরটি মূলত আনুষ্ঠানিক হলেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
র্যাব এবং বর্তমান মহাপুলিশ পরিদর্শক ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজির আহমদসহ বর্তমান ও সাবেক সাতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেজারি এবং ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট মানবাধিকার সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
পরদিন শনিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তার কার্যালয়ে তলব করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় ঢাকার অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র দফতরে এসে পৌঁছালে “পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বাংলাদেশের হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে কোন পূর্ব পরামর্শ ছাড়াই মার্কিন প্রশাসন একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উত্থাপিত উদ্বেগের বিষয়টি নোট করেছেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিকে তা জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। মিলার সম্মত হয়েছেন যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ায় চমৎকার বহুমুখী সম্পর্ক আরও গভীর করা যেতে পারে।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত পারস্পারিক স্বার্থের ইস্যুতে আগামী দিনে বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে মার্কিন সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।