রাজধানী ঢাকার মোট জনসংখ্যা এবং কর্মজীবীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বাইরের খাবার তথা রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভরশীলতা। খোলামেলা জায়গা এবং আড্ডা দেওয়ার পরিবেশের অভাবে বিকল্প হিসেবে তরুণ সমাজ বেছে নিচ্ছেন রেস্তোরাঁগুলোকেই। তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের রেস্তোরাঁও। নগরীর মূল সড়ক থেক অলিগলি এমন কোন জায়গা নেই যেখানে কোন না কোন ধরনের খাবার দোকান নেই।
বাধ্য হয়েই যাদের বাইরের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয় সেই কর্মজীবীরা বলছেন, খাবারের মান এবং দামের ব্যাপারে রেস্তোরাঁগুলো এখনও তাদের আস্থা অর্জন থেকে অনেক দূরে। পুষ্টিবিজ্ঞানিদের প্রশ্ন খাদ্যের মান নিয়ে। সমাজবিজ্ঞানিরা বলছেন, নগর জীবনের একঘেঁয়েমি দূর করা এবং সামাজিক মিলনমেলার ক্ষেত্রে রেস্তোরাঁগুলো অপরিহার্য তবে যা কেবল মুনাফার উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠাটা উদ্বেগের। তবে রেস্তোরার মালিকদের দাবি সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেয় তারা ভোক্তাদের চাহিদা ও সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ মানের খাবার সরবারহের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী সমিতির আওতায় মাত্র ৬৫০টি রেস্তোঁরা থাকলেও পুরো রাজধানীতে এ সংখ্যা প্রায় সাত হাজারের মত। ফাস্টফুড এবং সাধারণ খাবার থেকে শুরু করে কন্টিনেন্টাল, ইন্ডিয়ান, ইতালিয়ান, থাই, চাইনিজসহ সব ধরনের খাবার পাওয়া যাচ্ছে এখানে। রেস্তোরাঁ মালিকদের দাবি, মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। তারা নিত্য নতুন স্বাদ খুঁজে ফিরছে। রুচির পরিবর্তন আনতে রেস্তোরাঁগুলোতে তাই নিয়মিত আসছেন। কর্মজীবী দম্পতিরা সময় সাশ্রয় করতে রেস্তোরাগুলোর ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন বলে দাবি তাদের।
নাগরিকদের খাদ্যাভ্যাস, রেস্তোরাঁর ওপর তারা কতটা আস্থা রাখতে পারছে, খাবারের মান ও দামের ব্যাপারে তাদের অভিমত, তাদের সাম্প্রতিক প্রবণতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সরেজমিন পরিদর্শনের পাশাপাশি চ্যানেল আই অনলাইন কথা বলেছে নিয়মীত রেস্তোরার খাবার খান এমন বিভিন্ন শ্রেণির নাগরিক, রেস্তোরাঁর মালিক, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানি এবং সমাজবিজ্ঞানিদের সঙ্গে।
তরুণরা কেন ঝুঁকছে রেস্তোরাঁর প্রতি
রাজধানীর সীমান্ত স্কোয়ারে রয়েছে ২৩টি ফাস্টফুডের দোকান। তাদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বার্গার, পিজ্জা, শর্মা, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চাওমিন, নুডুলস, বিভিন্ন ফলের জুসসহ নানা কিছু। দুপুরের খাবারের জন্য রয়েছে ফ্রাইড রাইসও। বৈকালিক আড্ডা বা দুপুরের লাঞ্চ রাতের খাবারের জন্য জায়গাটি তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
এখানে কথা হয় খাবারের অর্ডার দিয়ে অপেক্ষারত কয়েকজন তরুণ-তরুণীর সঙ্গে। তারা হলেন আফনান, রাজিব, সুরভী, সাফিয়া এবং নাফিস। এরা সবাই বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তারা বলেন: সপ্তাহে চারদিন ক্লাস থাকলে অন্তত দুদিন তারা নিয়মিত এখান থেকে খাবার খান। আড্ডা দিতে হলেও তারা এখানে আসেন। কারণ হিসেবে তারা বলেন, অনেকের বাসা দুরে হওয়ায় এবং সঙ্গে করে খাবার না নিয়ে আসতে পারায় তাদের এখানে আসতে হয়। তাছাড়া ক্যাম্পাসে খোলামেলা পরিবেশ বা আড্ডা দেওয়ার মত জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই তাদের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সময় কাটাতে হয়।
এখানকার একটি দোকান ফুড স্কোয়ার’র ম্যানেজার নজরুল ইসলাম জানান সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত তাদের দোকান খোলা থাকে। ভোক্তাদের বেশিরভাগই তরুণ।
ঝিগাতলার মোড়ের ট্রাম্প ক্যাফেতে বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টির আয়োজন করেছেন তার কয়েকজন বন্ধু। এরা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ কলেজ এবং ডেফোডিল কলেজের শিক্ষার্থী। তারা হচ্ছেন, ইভান, তন্ময়, আফিস এবং ইরাজ। যার জন্মদিন সে আসার আগে তারা ব্যস্ত ছিলেন পার্টির আয়োজনে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তারা জানান, বন্ধুদের জন্মদিন হলেই তারা এখন রেস্তোরায় পার্টি করেন। কারণ একেতো ক্যাম্পাসে তা করার সুযোগ নেই। বাসা বা ছাদেও তারা আয়োজনের অনুমতি পান না।
জন্মদিনের এ পার্টির বাজেটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন: আমাদের ১০ বন্ধুর জন্য বাজেট সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার মত।
ট্রাম্প ক্যাফের অন্যতম মালিক ওমর ফারুক এবং অপারেশন ম্যানেজার কোরবান আলী জানালেন, তাদের রেস্তোরাঁয় মূলত কন্টিনেন্টাল এবং ইতালিয়ান খাবার পাওয়া যায়। পার্টির জন্য তাদের রয়েছে স্পেশাল জোন। কেউ চাইলে পুরো রেস্তোরাঁই রিজার্ভ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টার জন্য রিজার্ভ করলে ফ্লোর ভাড়া ২০ হাজার টাকা। ন্যূনতম ২০ জন হতে হবে এবং প্রতিজনকে অন্তত ছয় শ’ টাকার খাবার খেতে হবে। কেউ চাইলে রিভার্জ না করেও পার্টি করতে পারে। সে জন্য তাদের স্পেশাল জোন রয়েছে।
এই রেস্তোরাঁর অধিকাংশ ভোক্তাই বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়া পরিবার নিয়েও অনেকে আসেন বলে জানান তারা।
রুচির পরিবর্তন এবং বাধ্যবাধকতা
রাজধানীতে বাংলা খাবারের অন্যতম বড় রেস্তোরাঁ স্টার হোটেল, বেকারি এবং কাবাব’র ধানমণ্ডি শাখার সহকারী ম্যানেজার মুজিবুর রহমানের দাবি ভালো মানের খাবার এবং যৌক্তিক দামের কারণে এখানে সব শ্রেণির মানুষই খেতে আসেন। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: আমাদের এখানে প্রায় সব শ্রেণির মানুষই খেতে আসেন। কিছু আসেন কোন উপলক্ষ উদযাপন করতে, কারও কারও দরকার হয় রুচির পরিবর্তন। কেউ বা বাসায় রান্নার ঝামেলা এড়াতে নিয়মীতই এখান থেকে খাবার গ্রহণ করেন।
‘‘কর্মজীবী দম্পতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেরই তাই বাসায় রান্না করার সুযোগ হয় না। সময় বাঁচাতে তাই তারা নিয়মিতই এখান থেকে খাবার গ্রহণ করেন। এবং এ ধরনের ভোক্তার সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।’’ দাবি মজিবুর রহমানের।
ওই রেস্তোরাঁয় কথা হয় হারুণ অর রশিদ নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে খেতে এসেছেন তিনি। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: বাসায় রান্না হলেও নিয়মীতই পরিবার-পরিজন নিয়ে বাইরে খেতে আসি।
পাশের টেবিলে দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে খাবার খাচ্ছিলেন রুমা নামের একজন গৃহিনী। ধানমণ্ডির বিভিন্ন স্কুলে তার সন্তানেরা পড়াশোনা করায় নিয়মিতই তাকে বাইরে খাবার খেতে হয় বলে জানিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: সন্তানদের স্কুল থাকলে বাসায় রান্না করার সুযোগ হয় না। তাই আমাকে বাইরে খেতে হয়।
বাজারদরের তুলনায় দাম অনেকটা যৌক্তিক মনে করলেও মানের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন এই গৃহিনী।
দাম এবং মানের তারতম্যে অসহায় কর্মজীবীরা
বাইরের খাবারের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হয় যে পরিবারের স্বামী-স্ত্রী উভয়ই কর্মজীবী। বাসায় রান্না করার সময় এবং সুযোগের অভাবে বাধ্য হয়েই তাদের বাইরের খাবারের ওপর নির্ভর না করে উপায় থাকে না। কিন্তু শহরের রেস্তোরাঁগুলো এখনও তাদের আস্থা অর্জন থেকে বহুদূরে।
বেসরকারি চাকরিজীবী আলেয়া পারভীন লীনা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: শহরের রেস্তোরাঁগুলো কোনভাবেই নির্ভর করার মত নয়। প্রথম ব্যাপার হচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কারণ আমার সামর্থ থাকার পরেও আমি এর স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না। আর যে রেস্তোরাঁগুলো মানসম্মত খাবার সরবারহ করে, উচ্চমূল্যের কারণে সেগুলোতে প্রতিদিন আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত আমার সামর্থের মধ্যে যে রেস্তোরাগুলো রয়েছে, তার পরিবেশ আর আমার রুচি মিলিয়ে আস্থার জায়গাটা পাই না।
‘‘তাছাড়া আমি যদি কম আয়ের মানুষ হই, তবে দৈনিক হয়তো এক-দেড় শ’ টাকা দিয়ে খাওয়া সম্ভব নয়। আমি হয়তো ৭০-৮০ টাকার মধ্যে খাবার খুঁজছি। কিন্তু এ টাকায়ে আমি কোন বিল্ডিংয়ের রেস্তোরাঁ পাচ্ছি না। আমাকে যেতে হচ্ছে ছাপড়া টাইপের রেস্তোরাঁগুলোতে। সেখানে আমি খাচ্ছি ঠিকই। কিন্তু কী যে ভেতরে নিয়ে আসছি জানি না।’’
মানসম্মত খাদ্যের সঙ্কট এবং কর্মজীবীদের অহসায় অবস্থা তুলে ধরে এ চাকুরিজীবী বলেন, কর্মজীবী মানুষদের জন্য খাবারের এই সঙ্কটটা আসলে মারাত্মক। আমরা যারা কর্মজীবী তারা প্রতি মুহূর্তে এটা অনুভব করি। যদি অফিস থেকে কোন খাবারের ব্যবস্থা না থাকে তবে কর্মজীবীরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েন। আমার পরিচিত অনেকের কথা জানি যারা এসব বিবেচনা করে পাউরুটি কলা খেয়েও থাকে।
‘৭০ শতাংশ মানুষই স্ট্রিট ফুড খান’
প্রয়োজনের তাগিদে যারা বাইরে খান তাদের ৭০ শতাংশই রাস্তার পাশের খোলা খাবার (স্ট্রিট ফুড) খান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব রবিন সরকার। সরকারের নিরাপদ খাদ্য কর্মসূচিতে কাজ করা এবং এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ বোর্ডের এ সদস্য জানান, আমরা হিসেবে করে দেখেছি। প্রয়োজনের তাগিদে যাদের বাইরে খেতে হয় তাদের ৭০ শতাংশই স্ট্রিট ফুড খান। যেখানখার খাদ্য মান নিয়ে কারোরই কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।
খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানিরা যা বলছেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাগরময় বড়ুয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: বাইরের খাবার (স্ট্রিট ফুড) এবং রেস্তোরাঁর খাবারগুলোর বেশিরভাগই অতিরিক্ত ফ্যাট ও চর্বিযুক্ত। যারা মুটিয়ে যাচ্ছেন তাদের উচিৎ যথা সম্ভব এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা।
তবে স্বাস্থ্যমানের নিশ্চয়তা সাপেক্ষে ফলমূল বা এসবের জুস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: ক্যাম্পাসের সামনে বা রাস্তার পাশ থেকে ফলমূল বা এসবের জুস অনায়াসে খাওয়া যেতে পারে। কারণ আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজন অনুযায়ী ফলমূল খেতে পারে না। তাই স্বাস্থ্যগত ব্যাপারটি নিশ্চিত হতে পারলে আমি এসব খাবার গ্রহনের পরামর্শ দিই।
তবে আলাদা করে রেস্তোরাঁর খাবারের মান নিয়ে কোন গবেষণা পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে হয়নি বলে জানিয়েছেন এর পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন।
তবু কেন রেস্তোরায় ঝোঁক?
সমাজবিজ্ঞানিরা বলছেন, খাদ্যের একঘেয়েমি দূর করা এবং রুচির পরিবর্তনের জন্যই মূলত শহরবাসীর রেস্তোরাঁগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তাছাড়া মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাড়তি অর্থও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: নগর সভ্যতার অপরিহার্য অংশ হচ্ছে রেস্তোরাঁ। প্রাচীন কাল থেকে নগরীর রেস্তোরাঁগুলো নাগরিকদের অন্যতম আড্ডা এবং সামাজিক মিলনমেলার জায়গা ছিল। যেমন বিউটি বোর্ডিং ছিল সৈয়দ শামসুল হক, রফিক আজাদদের আড্ডার জায়গা।
‘তবে রেস্তোরাঁগুলোর উদ্দেশ্য যদি হয় কেবল বাণিজ্য করা তবে সেটা মারাত্মক। কারণ মুনাফা মূল উদ্দেশ্য হলে সেখান থেকে স্বস্তিদায়ক কিছু থাকে না।’
নগরবাসী বিশেষ করে তরুণদের ঝোঁকের বিষয়ে এ অধ্যাপক বলেন: ভিন্ন পরিবেশ এবং নির্মল বিনোদনের জন্য তরুণরা এখানে আসতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে এখান থেকেই তারা বিভিন্ন মাদকের প্রতি আসক্ত হতে পারে। তাই সে বিষয়টির ওপর খেয়াল রাখতে হবে।
খাদ্যের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে করণীয় কী
বেসরকারী চাকরিজীবী আলেয়া পারভিন লীনার মতে কর্মজীবীদের খাদ্য গ্রহণের সুবিধার্থে দুটি কাজ করা যেতে পারে। প্রথমত, যেসব এলাকায় অফিস বা কর্মস্থল বেশি সেখানে সরকারি উদ্যোগে কিছু রেস্তোরাঁ গড়ে তোলা যেতে পারে। যাতে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ সেখান থেকে সহজেই সাধ্য অনুযায়ী মানসম্মত খাবার খেতে পারে। দ্বিতীয়ত ব্যক্তিখাতকে খাদ্য সরবারহের ব্যাপারে উৎসাহ ও সহযোগিতা দেওয়া যেতে পারে। তাতে কর্মজীবীদের জন্য মানসম্মত খাবার নিশ্চিতের পাশাপাশি কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব রবিন সরকারের দাবি, কোন রেঁস্তোরা মালিক ইচ্ছে করে ভোক্তাদের মানহীন খাবার খাওয়ান না। কারণ যে খাবার বিক্রি করেন সে খাবার তারা নিজেরাও খান। তবে ক্যান্টিনের শ্রমিকদের অজ্ঞতার কারণে অনেক সময় খাদ্যের মান ঠিক রাখা যায় না।
‘‘মনে করেন আমার হোটেল বাবুর্চির হাতে বড় বড় নখ। রান্না করার সময় সে নখ থেকে ময়লা খাদ্যে মিশে গেল। বা বেয়ারার মাথার বড় বড় চুল। সেখান থেকে খাবারের মধ্যে চুল পড়লো। এগুলো কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভুল নয়। অজ্ঞতার এমন হয়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা রেস্তোরাঁর শ্রমিকদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেব।’’
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মতিঝিল, দিলকুশা, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব এবং ফকিরাপুল এলাকার রেস্তোরাঁগুলোকে নিরাপদ খাদ্যের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, খাবারের মান অনুযায়ী আমরা রেস্তোরাঁগুলোকে ভাগ করে স্টিকার লাগিয়ে দেব এবং সেটা প্রচারের ব্যবস্থা করবো। যাতে ভোক্তারা অন্তত মানের ব্যাপারে আগে থেকে জেনেই খেতে পারে।
তবে এ ক্ষেত্রে সকারের কিছু দায় দেখছেন তিনি। কারণ সরকার যদি প্রতিটি রেস্তোরাঁয় শতভাগ নিরাপদ পানির সরবারহ করে এবং রেস্তোরাঁর সামনের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে তবেই স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক কমে যাবে। বাকী দায় রেস্তোরাঁর মালিকদের বলে মনে করেন তিনি।