বেশ কিছুদিন ধরে ভারতীয় বাংলা পত্রিকাগুলো বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গণের তারকাদের বেশ খোঁজ খবর নিচ্ছে।
কোন অভিনেত্রী বিয়ে করছেন, কোন অভিনেত্রী কার সঙ্গে সিনেমা করছেন, কোন অভিনেতার ছবির দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে এমনকি নায়িকা দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের মিডিয়াতে খবর আসার আগেই ভারতীয় গণমাধ্যমগেুলো জেনে যাচ্ছে। যার সত্যতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
যখন বাংলাদেশের সিনেমা ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ও কলকাতার সিনেমা ‘বেলেশেষে’ দিয়ে যখন দু’দেশের সংস্কৃতির তাঁরকাটার বেড়া কাটা হচ্ছে ঠিক তখনি ভারতের গণমাধ্যমে কিছু আপত্তিকর শিরোনাম দিয়ে বাংলাদেশের অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের শিরোনাম করে নিউজ করছে। শুধু নিউজ না আপত্তিকর ছবিও দিয়ে সে নিউজগুলো প্রকাশ করা হচ্ছে।
কিছুদিন আগে জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমো বিয়ে করেছেন। বাংলাদেশের প্রায় সবকটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয় মিমো বিয়ে করেছেন। বা মারুফকে বিয়ে করলেন মিমো। কিন্তু কলকাতার ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে মিমোর বিয়ের শিরোনামে লেখা হয় ‘নিজের পঞ্চম বিয়েতে দারুণ সাজ অভিনেত্রীর’। এবং সে খবরে অভিনেত্রীর ছবিটাও ছিলো বেশ আপত্তিকর।
লাক্স তারকা প্রসূন বিয়ে করছেন এমন সংবাদ ভারতীয় প্রভাবশালী পত্রিকা আনন্দবাজার শিরোনাম করেন ‘কাকে বিয়ে করতে চলেছেন বাংলাদেশের প্রসূন?’ এমনকি প্রসূন তার নতুন ছবির শুটিং কাজ শেষ করেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলেও জানান আনন্দবাজার।
তবে বাংলাদেশের মিডিয়া আনন্দবাজারের সূত্র ধরে নিউজ করলেও প্রসূনের কাজ থেকেই তার বিয়ের সম্পর্কে এখনো কোনো কিছু জানা যায়নি। শুধু বিয়ে নয় ছোট পর্দার ও বড় পর্দার দাপুটে অভিনেত্রী প্রসূন নিয়ে আরো একটি সংবাদ প্রকাশ করে আনন্দবাজার। শিরোনাম ছিলো ‘ফুল ফুটেছে এই মনে’?
বাংলাদেশের দর্শকদের সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে কিং শাকিব খান ও বর্তমান সুপারহিট নায়িকা পরীমনিকে নিয়ে আননাদবাজারের আপত্তিকর হেডলাইনে। আনন্দবাজর লিখেছে, ‘শাকিব-পরী হট-বেড সিন ভাইরাল!’
মিডিয়া অঙ্গণের তারকাদের নিয়ে বাইরের দেশের মিডিয়ার এমন আপত্তিকর শিরোনাম ও ছবি নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সুজানা জাফর।
0তিনি বলেন, তারকাদের নিয়ে যদি বাইরের দেশের মিডিয়া এমন নিউজ করে থাকে তাহলে আমাদের দেশের তারকাদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে। কারণ দর্শকরা তো আর ভালো-খারাপ বুঝবে না তারা মনে করবে এটাই সত্য। আর ওখানার সাংবাদিকরা যদি আমাদের সম্পর্কে না জেনে যদি তারকাদের নিয়ে বাজে নিউজ করে তাহলে আমাদের দেশের সাংবাদিকদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত।
অবশ্য তারকাদের উদ্দেশ্যও সুজানা বলেছেন, আমরা তো সেলিব্রেটি। দর্শক আমাদেরকে ফলো করে। তাই এমন কোনো কাজ আমাদেরও করা উচিত না যেটা বাজেভাবে ফলো করবে। আসলে নিজের জায়গাকে সবসময় শক্ত রাখতে হবে। অতি খ্যাতি পাওয়ার জন্য না বুঝে কোনো কাজ করা উচিত নয়।
অন্যদিকে লাক্স তারকা ও চিত্রনায়িকা মৌসুমী হামিদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কলকাতায় আমার কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। ওদের সঙ্গে কাজ করতে যেয়ে আমার যেটা মনে হয়েছে আমাদের দেশের শিল্পীদের সাপোর্ট ও শ্রদ্ধার জায়গাটা ওদের খুবই কম। দু’একজন তো ভিন্ন হবেন। আসলে আমাদের দেশে যৌথ প্রযোজনার ছবি নিমার্ণের পর থেকেই এ ঝামেলা শুরু হয়েছে।
ওদের দেশের সংস্কৃতি যেনো কিভাবে ঢুকে যাচ্ছে। ওদের মতো করে কথা বলা, পোশাক পড়া, সবকিছুই যেনো কলকাতার ছবিকে ফলো করে করা হচ্ছে। কিছুদিন আগেও দেখলাম জয়া আপুকে নিয়ে একটি নিউজ করলো। কেনো ওরা আমাদের নিয়ে এসব নিউজ করবে। আমাদের দেশের তারকাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করবে।
তবে আরো একটা কারণ হতে পারে, আমাদের দেশের কিছু ছবি তো ওদের দেশের মুক্তি পাচ্ছে। তাই আমাদের সম্পর্কে বাজে কথা হট বা ভাইরাল বলে দর্শক হলে টানতে চাইছে।
তবে মিডিয়া অঙ্গণের বর্তমান সময়ের এ দু’ অভিনেত্রী মনে করেন, অন্যদেশের সংস্কৃতির প্রতি যদি আমাদের প্রভাব বেশি থাকে তাহলে তারকারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য দেশের ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।