গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বর্তমানে দেশের বাইরে থাকা নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাইয়ের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সোমবার আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
আজকের আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন: ‘ড.মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে লেবার কোর্টে তিনটা মামলা হয়। এরপর উনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তবে যখন মামলা হয় তখন তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সময়ও তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। তাই এখন ইউনূস বিদেশ থেকে এয়ারপোর্টে আসলে গ্রেপ্তার হতে পারেন আশঙ্কা করে উনার ভাই মুহাম্মদ ইব্রাহিম একটি রিট পিটিশন করেন। সেই রিটে বলা হয়: ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন বিশিষ্ট নাগরিক এবং নোবেল বিজয়ী। ওনার আদালতের থেকে লুকিয়ে থাকার কোনো কারণ নেই। উনি দেশে এসে আদালতে যাবেন। হাইকোর্ট এসব বিষয় শুনে আদেশ দিয়েছেন। আদালত তার আদেশে দেশে আসার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।’
এর আগে যে তিন মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিলো সেই তিন মামলার কার্যক্রম ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট।
তার আগে গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারণে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ আনা) তিন কর্মচারীর করা তিন মামলায় সমনের জবাব দিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ৯ অক্টোবর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান রহিবুল ইসলাম ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
শ্রম আদালতে হওয়া তিনটি মামলাতেই গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে আসামি করা হয় গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীনকে। তবে শ্রম আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত নাজনীন সুলতানা ও খন্দকার আবু আবেদীনের জামিন মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে এই মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খন্দকার আবু আবেদীন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তিন মামলার কার্যক্রম ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে আদেশ দেন।
২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পান ড. মুহাম্মদ ইউনুস। অবসর গ্রহণের সময়সীমা নিয়ে এক বিতর্কের পর ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ড. মুহম্মদ ইউনুসকে অপসারণ করা হয়।