ডেঙ্গু রোগ নির্মূলে ‘ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট’ এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে মশার বিস্তার রোধের যে প্রক্রিয়া চলছিল তা এখনও গবেষণাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের জাতীয় পরিবেশ সংস্থা (এনইএ)।
তাই ডেঙ্গু প্রকোপ বাড়লেও এখনই মশা নিধনে ‘ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট’ ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে বিশ্বের ১৭টি দেশে এডিস মশা ধ্বংস করতে এমন একটি প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছিল। সেই প্রকল্পের আওতায় পুরুষ এডিস মশার শরীরে ‘ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট’ নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করিয়ে দেয়া হবে। আর ওই পুরুষ মশাটি যখন স্ত্রী এডিস মশার কাছে আসবে তখন স্ত্রী মশাটিও প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। এভাবেই বিশ্ব থেকে এক সময় এডিস মশার বিস্তার রোধ করা যাবে।
তবে এখনও যেহেতু গবেষণার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি তাই এডিস মশার মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া এখনই প্রবেশ করানো যাচ্ছে না।
এনইএ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে এই প্রকল্পের গবেষণাটি চলছে। এখন পর্যন্ত গবেষণাটি তৃতীয় ভাগ পর্যন্ত সমাপ্ত হয়েছে।
শুরুতে পরীক্ষাধীন পর্যায়ে এডিস মশার ঘনবসতি এলাকা চিহ্নিত করা হয়। প্রথমেই সিঙ্গাপুরের নি সোন এবং টাম্পিনস এলাকায় ৯০ শতাংশ এডিস মশার অবস্থানের ওপর গবেষণা চালানো হয়।
এরপর ইশুন এবং টাম্পিনস অতিক্রম করে আরও বেশি এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী খুঁজে বের করার জন্য গবেষণাটিতে জোর দেয়া হয় এবং সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সমন্বিত ডেটা সংগ্রহ করা হয় বলে জানিয়েছে এনইএ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট এর আওতায় প্রথমে সিঙ্গাপুর এবং আরও কিছু দেশে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য পাইলট গবেষণা চালানো হয়েছিল।
এদিকে সিঙ্গাপুরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী রয়েছে মোট ১৮৮ জন। এর মধ্যে ৪৫ অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বাংলাদেশেও ‘ওলব্যাকিয়া প্রজেক্ট’ এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা চলছে। গবেষণায় সফলতার ওপর নির্ভর করে দুই বা তিন বছরের মধ্যে এই প্রকল্প চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৫৬৫ জন মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল জুলাই মাসেই রেকর্ড ৬ হাজার ৪২১ জন হাসপাতালে গেছেন।