ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে এবং অল্প অল্প করে অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
একইসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেছেন: আমরা মনে করি না যে নগর কর্তৃপক্ষ কোনো ভুল করেছে বা ভুল পথে আছে। আমরা চাই নগরবাসীকে সাথে নিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে।
সোমবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনসচেতনতামূলক সভায় যোগ দেন সাঈদ খোকন। ওই সভা শেষে চ্যানেল আইয়ের মুখোমুখি হয়ে তিনি একথা বলেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতির জন্য দায়ী কে? চ্যানেল আইয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন: আমি দায়-দায়িত্বটা কারও উপর চাপাতে চাচ্ছি না। মূল বিষয় হচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে, তাই আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই।
তিনি বলেন: এজন্য জনগণের সাহায্য-সহযোগিতা, সতর্কতা এবং সরকারের যে চলমান উদ্যোগ, এর সমন্বয়ে আমরা এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবো বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
প্রায় দু’সপ্তাহ পর আপনারা বলছেন পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে এবং এখন আপনার বলছেন এটা কারও একার পক্ষে সমাধান সম্ভব না। সমন্বিত উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। এ দায় উত্তর এবং দক্ষিণকে নিতে হবে। এই মুহূর্তে নগরবাসীর কাছে, অর্থাৎ যারা আপনাকে ভোট দিয়েছে তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে কি আপনার মনে হয়?
এই প্রশ্নের উত্তরে সাঈদ খোকন বলেন: আমি প্রথমত বলব যে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করছি। আমাদের চেষ্টার বা প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই। সরকারের সকল সংস্থা একযোগে কাজ করছে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটির প্রথম পর্যায়ে যে সমন্বয়ের অভাব ছিল, এখন সেটাও ঘুঁচে গেছে।
নগরবাসীর কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন, কিন্তু নগরবাসীর কাছে নিজের ভুলের জন্য কি ক্ষমা চাইবেন না? চ্যানেল আইয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন: আমরা মনে করি না যে নগর কর্তৃপক্ষ কোনো ভুল করেছে বা ভুল পথে আছে। আমরা চাই নগরবাসীকে সাথে নিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে। এডিস মশা বাড়ি ঘরের ভেতরে জন্মায়। ভবনের ভেতরে জন্মায়। আমাদের নাগরিকদের সতর্কতা এবং অংশগ্রহণ এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জরুরি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ‘দেশব্যাপী মশকনিধন ও পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহে’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ছেলেধরার মতো গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন সাঈদ খোকন। সেসময় তিনি বলেন: মশা নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। সাড়ে তিন লাখ আক্রান্তের যে তথ্য এসেছে, তা কাল্পনিক ও সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক।
এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে রোহিঙ্গাদের প্রজনন ক্ষমতার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
তাদের এমন মন্তব্যের এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ডেঙ্গুকে সহজভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে কথা না বলে কাজে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেন।
এরপর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই সিটি মেয়রকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দেয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।