চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ডিসেম্বর থেকেই পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি: সিদ্দিকুর রহমান

মজুরি নির্ধারণে পরবর্তী বৈঠক ১২ সেপ্টেম্বর

পোশাক শ্রমিকদের নতুন ন্যূনতম মজুরি যেদিনই ঘোষণা করা হোক না কেন; তা ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

সোমবার রাজধানীর তোপখানা রোডে ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চতুর্থ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান তিনি।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অক্টোবর মাসের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের নতুন ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। মজুরি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করছে। গবেষণা সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকেও মজুরি নির্ধারণের বিষয়ে নানা ধরনের প্রস্তাব আসছে। সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয় ও মালিকদের সক্ষমতা- এই দুটি বিষয় বিবেচনা করে মজুরি নির্ধারণ করা হবে।

‘তবে যখনই মজুরি চূড়ান্ত হোক না কেন তা বাস্তবায়ন ডিসেম্বর থেকেই হবে। শ্রমিকদের বিদ্যমান মজুরিও বাস্তবায়ন হয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, শ্রমিকপক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ফজলুল হক মন্টু এবং শ্রমিক নেতা শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, সিদ্দিকুর রহমান ছাড়াও মালিকপক্ষে উপস্থিত ছিলেন কাজী সাইফুদ্দীন আহমেদ। আর নিরপেক্ষ সদস্য হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।

মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, আজকের বৈঠকে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। উভয় পক্ষই মোটামুটি একটা সিদ্ধান্তের কাছাকাছি এসেছে। তবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।

‘আবারও নতুন বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেছি। আশা করছি চলতি মাসের ১২ তারিখে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে ন্যূনতম মজুরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’

তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর ১৭ অক্টোবর তা শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় তা যাচাই-বাছাই করে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠাবে। এরপর বর্ধিত মজুরির চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে।

ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে মজুরি বোর্ডের সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

জুলাই মাসের ১৬ তারিখে মজুরি বোর্ডের তৃতীয় বৈঠকে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ১২ হাজার ২০ টাকা ও মালিকপক্ষ থেকে ৬ হাজার ৩শ টাকা ন্যূনতম মজুরি করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল। তখন শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।

নিরপেক্ষ হিসেবে মজুরির বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষ উভয়ের ন্যূনতম মজুরির সিদ্ধান্তের কাছাকাছি আসুক। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

‘শুধু এক পক্ষের উপর শুধু এক পক্ষের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না। দেখতে হবে মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষ যেন ভাল থাকতে পারে সেসব বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

বোর্ডের বৈঠক চলাকালে মজুরি বোর্ডের সামনে ‘জি-স্কিপ ও গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনসহ’ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা জড়ো হয়ে ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকার দাবিতে আন্দোলন বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, পোশাক শ্রমিকদের মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

তারা বলেন, দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশই আসে পোশাক খাতের শ্রমিকদের ঘামের বিনিময়ে। অথচ এই শিল্পের শ্রমিকদের অবস্থা শোচনীয়।

‘২০১৩ সালে সরকার পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করেছিল ৫ হাজার ৩শ টাকা। ৫ বছর পরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি ৬ হাজার ৩শ টাকা প্রস্তাব করেছে। এটা শ্রমিকদের সাথে তামাশা ও প্রতারণার শামিল।’