স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) অনুরোধে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির অনুষ্ঠানে ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমি ডিজি অফিসে একটি সভায় গিয়েছিলাম। সভা শেষে ডিজির অনুরোধে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির অনুষ্ঠানে ছিলাম।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দুটি সংস্থাকে কিছু কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। একটা হল জেকেজি। যদি অন্যায় কাজ করে থাকে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান ও তিনি (প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ) দায়ী। আরেকটি হল রিজেন্ট হাসপাতালে। সেই হাসপাতালকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে কিছু প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়াগুলো পালন করে অধিদফতর। নিয়োগে সই করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ডিজি অফিসে একটি সভায় গিয়েছিলাম। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ছিল। সচিবেরা ছিলেন, অন্যান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। ডিজির অনুরোধে আপনারাও একটু থাকেন, চুক্তি স্বাক্ষর হবে। কী সেই স্বাক্ষর হবে? জবাবে ডিজি বললেন রিজেন্টের সঙ্গে স্বাক্ষর হবে। দুপুরের খাবারের পর। তো আমরাও সেখানে ছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা খুশি ছিলাম যে একটা নতুন হাসপাতাল করোনার চিকিৎসা দেয়ার জন্য আসল। প্রাইভেট তো তখন করোনা চিকিৎসা দিতে দ্বিধা করছে। ওনারাও (রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) আসল। ওনারা এসে সই-স্বাক্ষর করল, আমরাও খুশি হলাম। ব্যাস ! আমরা ওখান থেকে সরে গেলাম।
লাইসেন্সের মেয়াদ নেই এমন হাসপাতালকে (রিজেন্ট হাস্বাক্ষরসপাতাল) কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হিসেবে অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে স্বাস্ব্য অধিদফতরের ডিজি আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রালয়ের ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, ন্যক্কারজনক। প্রতিষ্ঠানটি যে কাজ করেছে, অন্যায় কাজ করেছে। অন্যায় কাজ করলে আইন অনুযায়ী যে ব্যবস্থা আছে সেটা নেয়া হয়েছে। সে অনুয়ায়ী শাস্তি হবে। এখানে মন্ত্রণালয় কোনো নির্দেশনা দিয়েছে কিনা, দিলে তো ফাইলেই থাকত। ডিজির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে- সেটা দিলেই পাওয়া যাবে। সচিব ব্যাখ্যা চেয়েছেন। দেখি কী ব্যাখ্যা দেয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অধিদপ্তরের কোনো সমস্যা চলছে কি না, এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অধিদপ্তরের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোনো সমস্যা নেই। দুটিই সরকারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। দুটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে কোভিড-১৯ এর দুর্যোগ মোকাবিলায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোন প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়ার এখতিয়ার শুধু অধিদপ্তরের রয়েছে মন্ত্রণালয়ের এক্ষেত্রে কোনো দায়ভার নেই।
এ সময় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের বিষয়ে অভিযান চালানোর কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে প্রতিনিয়ত পরিদর্শন এবং যাচাই করা হবে।
করোনার ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালকে সিলগালা করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান সাহেদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এছাড়াও করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার প্রতারণার মামলায় জেলে রয়েছেন জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল চৌধুরী, তিনদিনের রিমান্ডে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা। তাকে গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে।