চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ডিজিটাল বাংলাদেশের সামনে এখন দু’টি চ্যালেঞ্জ: তারানা

সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করা এবং নারী ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের আওতায় নিয়ে আসাকে সরকার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

অন্যান্য ক্ষেত্রে দেশে যে ডিজিটাল রূপান্তর ঘটেছে তা পুরো বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন,‘খুব দ্রুত ও স্বল্প সময়ের মধ্যে এই রূপান্তর ঘটেছে। একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও ডিজিটাল রূপান্তরের আওতায় আসছে। ই-গভর্ননেন্স,ই-এডুকেশন,ই-এগ্রিকালচার বিকাশ লাভ করেছে।এসব দিক বিবেচনায় আনলে প্রসার আসলে অনেকটাই হয়েছে।চ্যালেঞ্জ সব দেশের মতো বাংলাদেশের সামনেও আছে।নারীদের প্রযুক্তির মূল স্রোতে আনার জন্য জন্য ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছি, তাদের প্রশিক্ষণ  দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন,‘সব প্রান্তিক মানুষকে এখন ডিজিটাল সেবা দেয়া এবং সেবার মান উন্নত করাই সরকারের লক্ষ্য। এই সেবাকে আরও সুলভ করতে চাই আমরা। এই তিনটি অন্তর্ভূক্তিমূলক ডিজিটালাইজেশনই আমাদের অগ্রাধিকার।’

শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সার্ক টেক সামিট উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশ, ভারতসহ সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের মধ্যে পরস্পর মত বিনিময় এবং সাইবার সিকিউরিটির নিরাপত্তার বিষয়টিকে কিভাবে আরো জোরদার করে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সেই লক্ষ্যেই এই সম্মেলন।

‘ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন’ অর্থাৎ ডিজিটাল রূপান্তরকে প্রাধান্য দিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং কলকাতার ইনফোকম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রুপের প্রধান প্রযুক্তি উপদেষ্টা কে কে মহাপাত্র।

তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগে থেকেই জোরদার আছে। এদেশ থেকে প্রযুক্তি এবং ব্যবসায় সংশ্লিষ্টদের দারুণ সাড়া পেয়ে আমরা অভিভূত। এই প্রযুক্তি সম্পর্ক আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নেবে এটাই আশা করি। সার্ক টেক সামিট ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশ-ভারতসহ সব সার্কভূক্ত দেশের মধ্যে প্রযুক্তির সেতুবন্ধন সুদৃঢ় করবে বলেও প্রত্যাশা করছি।’

সামিটে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক সেমিনার গুলোতে বিগডাটা , ক্লাউড কম্পিউটিং ,ডিজিটাল বিজনেজ সিকিউরিটির মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে।
সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট তপন কান্তি সরকার বলেন,‘ডিজিটাল রূপান্তর একেক মানুষের জন্য একেক রকম। যদিও এবারের থিম ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন তবুও মূল গুরুত্বের জায়গাটি আসলে সাইবার সিকিউরিটি। কারণ প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রযুক্তি ঝুঁকি। কোনো সঠিক করণীয় নির্ধারণ না করেই পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর হলে হ্যাকের ঝুঁকি থেকেই যায়।’

দেশকে ডিজিটাল করতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার।

সরকার সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিলেও এখনো বেসরকারি পর্যায় থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব বলেন,‘বর্তমান সময়ে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আবশ্যক হয়ে গেছে। ডিজিটাল প্রসার হলেও এখনো জনগণের প্রযুক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। সরকারিভাবে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার (সক) স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারবে কারা কোথায় থেকে কোথায় সাইবার আক্রমণ করছে। প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু সচেতনতামূলক নির্দেশনাও আমরা দিয়েছি। সরকার সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিতে এগিয়ে আসলেও আমাদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পিছিয়ে আছে, এগিয়ে আসছে না।’


আন্ত: আঞ্চলিক তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সম্পর্ক জোরদার করতে ১১ আগস্ট শুরু হওয়া এই সম্মেলন শেষ হবে ১২ আগস্ট।

এই দু’দিন ডিজিটাল রূপান্তরে অনলাইন লেনদেন, প্রযুক্তি সেবা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা, ঝুঁকি মোকাবেলা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে ৯টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সার্ক সিসিআই এর চেয়ারম্যান শাফকাত হায়দার,প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরি প্রমুখ।