ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য প্রস্তাবিত রেগুলেশন ও নীতিমালার উপর মতামত প্রদানের সময়সীমা বাড়াতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভ ওয়ার্কিং গ্রুপ।
অংশীজনদের সাথে এ বিষয়ে অর্থপূর্ণ এবং গভীর সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে খসড়া দুটির উপর পর্যবেক্ষণ, মতামত ও সুপারিশ প্রদানের সময়কাল আরও অন্তত আট সপ্তাহ বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন তারা।
সোমবার ওয়ার্কিং গ্রুপের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যথাক্রমে ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম রেগুলেশনের খসড়া এবং ওটিটি কনটেন্টভিত্তিক পরিসেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়।
ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে, এই দুটি খসড়ার গভীরভাবে মূল্যায়ন প্রয়োজন। ডিজিটাল পাবলিক স্পেস ব্যবহারকারীদের সাংবিধানিক অধিকারের উপর প্রস্তাবিত আইনি বিধানগুলোর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ খসড়া রেগুলেশন ও নীতিমালার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করতে চায়।
উল্ল্যেখ্য, বিটিআরসি প্রস্তাবিত খসড়া রেগুলেশনের উপর মতামত জমা দেয়ার সংশোধিত সময়সীমা ছিল ৫ মার্চ ২০২২। অপরদিকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের খসড়া নীতিমালার উপর মতামত প্রদানের সংশোধিত সময়সীমা আজ ৭ মার্চ ২০২২ শেষ হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নীতিগুলিকে আলিঙ্গন করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পকে অর্থবহ করে তুলতে নিউ মিডিয়া (ডিজিটাল মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াসহ) ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য এমন একটি নির্দেশিকা থাকা উচিত যা ডিজিটাল স্পেসে নাগরিকের অধিকারকে সম্মান, সুরক্ষা এবং প্রসার করবে।
ওয়ার্কিং গ্রুপ জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য এবং বাংলাদেশে একটি উন্মুক্ত, বাধাহীন এবং নিরাপদ ইন্টারনেট চালু করার জন্য বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। পাশাপাশি ডিজিটাল পাবলিক স্পেস ব্যবহারকারীদের সাংবিধানিক অধিকার উপভোগ করতে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভিজ্ঞতা অনুভব করতে এবং বাংলাদেশের আইন দ্বারা নিশ্চিত করা তথ্যে প্রবেশগম্যতার সুবিধা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়ার্কিং গ্রুপ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশকে প্রকৃত অর্থে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তর করার বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা স্মরণ করিয়ে দিতে চায়। একই সঙ্গে সরকারকে নাগরিকদের চাহিদা পূরণের জন্য একটি ব্যাপক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানায়, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানদণ্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে। যেখানে ইন্টারনেট হবে নাগরিকদের জন্য ভয়ভীতিহীন মতপ্রকাশের একটি উন্মুক্ত ফোরাম।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভ ওয়ার্কিং গ্রুপ হল সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ যারা বাংলাদেশের আইন দ্বারা নিশ্চিত অধিকার ভোগ করার জন্য নাগরিকদের সাংবিধানিক, আইনগত এবং নৈতিক অধিকারের প্রধান সমস্যাগুলি সমাধানে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।
গ্রুপটি কৌশলগত অ্যাডভোকেসি, প্রচারণা, বিদ্যমান জাতীয় আইনী কাঠামোর বিশ্লেষণ এবং দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতাকে উৎসাহিত ও অগ্রসর করার লক্ষ্যে সরকারি নীতি ও অনুশীলনের আইনি সংস্কারের জন্য সুপারিশ প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে।