ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান মিজানের ৩ বছরের ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায় ঘোষণা করেন। এর আগে রায় শুনতে সকাল সাড়ে ১০টায় মিজান ও বাছিরকে কারাগার থেকে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়।
গত ৩ জানুয়ারি আসামি মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছিরকে আদালতে হাজির করলে আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে বিচারক তাদের কাছে সাফাই সাক্ষী দেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। সে সময় আসামিরা সাফাই সাক্ষী না দিলেও লিখিত বক্তব্য জমা দেবেন বলে আদালতকে জানান। এজন্য তারা সময়ও চান।
এরপর ২৪ জানুয়ারি একই আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে দুদক। যুক্তি উপস্থাপন শেষে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। এরপর ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। একই বছরের ১৮ মার্চ মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠনের আদেশ দেন আদালত।
ওই বছরের ১৯ আগস্ট মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়, ‘দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে কমিশনে দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে, নিজের লাভবান হওয়ার আশায়, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমানকে অবৈধভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণ করেন।’
মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করতে ৪০ লাখ টাকা ঘুস দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ৪০ লাখ টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।