লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলোতে তিন দিন ধরে ধর্মঘটে থাকা চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে চার ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মমতা কলকাতার সরকারি এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে ক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ শোনেন। তারপর তাদেরকে কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু জবাবে চিকিৎসকরা ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই’ বলে মমতার সামনেই উচ্চস্বরে স্লোগান দিতে থাকেন।
তখনই মুখ্যমন্ত্রী তাদেরকে আন্দোলন ছেড়ে ফিরে যাওয়ার জন্য চার ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। হুঁশিয়ার করে বলেন, যে চিকিৎসকরা এই সময়ের মধ্যে কাজে ফিরবেন না তাদেরকে হোস্টেল ছেড়ে দিতে হবে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘তারা বহিরাগত হয়ে যাবে। তখন সরকার তাদেরকে কোনো রকম সমর্থন দেবে না। ধর্মঘটে যাওয়া চিকিৎসকদের প্রতি আমি নিন্দা জানাই। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কত পুলিশ সদস্য প্রাণ হারায়। কিন্তু তাই বলে তো পুলিশ ধর্মঘট ডাকে না।’
রাজ্যের নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (এনআরএস) সোমবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালের আউটডোরে ধর্মঘটের ডাক দেয় চিকিৎসকদের সংগঠন।
আন্দোলনরত ডাক্তারদের অভিযোগ, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে রোগীর আত্মীয়রা কর্তব্যরত ইন্টার্ন ডাক্তারকে মারধর করে।
ওই ডাক্তার বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মাথায় আঘাত নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। তার অবস্থা গুরুতর।
এ ঘটনার পরপরই এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তাররা নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিতে দায়িত্ব পালন বন্ধ করে দেন। একইসঙ্গে তারা অভিযোগ করেন, তাদের সহকর্মী হামলার শিকার হওয়ার সময় পুলিশ আশপাশে থাকলেও নিস্ক্রিয় ভূমিকায় ছিল।
তারপর থেকেই এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে পুরো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে হাসপাতালগুলোতে জুনিয়র ডাক্তাররা ধর্মঘট পালন শুরু করেন। এক পর্যায়ে সিনিয়র চিকিৎসকরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
তিন দিন ধরে চলা ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।