সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবিক উন্মেষের প্রত্যাশা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শ্রবণা শফিক দীপ্তি।
সাধারণ শিক্ষার্থীর কাতারে থেকে বিভিন্ন শিক্ষার্থী অধিকার আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ডাকসু নির্বাচনে তার জয় এনে দেবে বলে মনে করছেন তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিপীড়ন বিরোধী ভিসি কার্যলয়ের সামেনে বিক্ষোভকালে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে গণমাধ্যামে শিরোনাম হয়েছিলেন। শুরুতেই ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সোচ্চার থাকা দীপ্তি তখন দাবি করেছিলেন: আদালতের রায়ে ডাকসু যখন আলোচনায়, তখন তা বানচাল করতেই ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংযোজিত স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন তিনি।
ডাকসু’তে আপনি কেন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অনেক আন্দোলন করেছি। ২৩ জানুয়ারি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশী নিপীড়নের বিক্ষোভকালে ছাত্রলীগ নেত্রীদের হামলার শিকার হয়েছিলাম। ওই সময়টাতে ফিজিক্যালি এবং ভার্চুয়ালি নির্যাতন সইতে হয়েছে আমাকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার বিচার পাইনি।
২৮ বছর পর যখন ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার আন্দোলনে সব সময় সোচ্চার থাকা দীপ্তি চাইছেন এমন জায়গায় থেকে বিচারহীনতার অবসান ঘটাতে। তার বিবেচনায় ক্ষমতার বাইরে থেকে অধিকার প্রতিষ্ঠার উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম ডাকসু। তাই ডাকসু’তে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিনি।
ডাকসুতে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক’ পদে কেন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন? আর বিজয়ী হলে কী করবেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন: বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মুক্তিযদ্ধের অবহেলিত যতো নিদের্শন রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণের জন্য কাজ করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভেতর ছয়টি গণকবর রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণ করাসহ ‘একাত্তর কর্ণার’ শিরোনামে মাসভিত্তিক সেমিনার-বিতর্ক আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে চান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও রয়েছে তার পরিকল্পনা। একটি স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠন করে দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজে গিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানোর বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে তার।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অধিকতর গবেষণা এবং পিএইচডি চালুর দাবি আদায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি কাজ করবেন বলে জানান দীপ্তি।
নির্বাচিত হলে প্রত্যাশার পূরণ কতটুকু করতে পারবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন: যদি আমি নির্বাচিত হই, কতটুকু সফল হতে পারবো জানি না, তবে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরী করে যেতে চাই যেন আমার পরে যারা আসবেন তারা যাতে এ যাত্রাকে সফল শীর্ষে নিয়ে যেতে পারেন। এতে বন্ধ হবে বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে ব্যবসা।
২৮ বছর পর আগামী ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।