নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন না দেয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হওয়ার পর সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলোকে চিঠি দিয়ে আলোচনায় ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
১৬ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কার্যালয় সংলগ্ন একটি কক্ষে এই সভা হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী সাক্ষরিত ওই চিঠি বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছাত্র-সংগঠনগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বরাবরে পৌঁছে দেয়া হয়।
ছাত্রসংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম উল্লেখ করে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘সার্বিক বিষয় বিবেচনায় শুধুমাত্র ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সভায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত। সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।’
চিঠিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর গোলাম রাব্বানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য আমরা ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে চিঠি দিয়েছি। আমরা হলগুলোতে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছি। নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনার জন্যই ছাত্র সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে আলোচনায় বসব।’
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছর যাত্রা শুরু করে ডাকসু। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ডাকসু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা ছিলেন অগ্রভাগে।
স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচনের পর বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই নির্বাচন আর হয়নি।
ছয় বছর আগের একটি রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে এবছরের ১৭ জানুয়ারি এক রায়ে হাইকোর্ট ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু সাত মাসেও নির্বাচনের কোনো উদ্যেগ দৃশ্যমান না হওয়ায় গত ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান রিটকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
জবাব না পেয়ে গত বুধবার তিনি হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়।