চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে শতভাগ সমর্থন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে দেয়া ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর এবং রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন প্রয়োজন। ডাকসু নির্বাচন হতেই হবে, তা না হলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’ রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের সঙ্গে আমরা শতভাগ সহমত পোষণ করছি। একসময় দেশের ‘সেকেন্ড পার্লামেন্ট’ হিসেবে পরিচিত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। দেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরির আঁতুড়ঘর এবং ছাত্রদের অধিকার আদায় ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিলো এই ছাত্র সংসদ। ভাষা সংগ্রাম থেকে শুরু করে স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন– জাতীয় ইতিহাসে এমন কোন ঘটনা নেই যেখানে ডাকসু বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেনি। কিন্তু পাকিস্তানের অগণতান্ত্রিক সরকার, স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সামরিক শাসনামলেও ডাকসু নির্বাচন হলেও নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরুর পর থেকে এখানে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত দু:খজনক একটি বিষয়। অবশ্য শুধু ডাকসু’ই নয় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনও হয় না প্রায় দুই দশক ধরে। অথচ এই সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন প্যানেলের নির্বাচন থেমে থাকেনি। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষা দেয়, দেশে ভবিষ্যতের যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলে। ডাকসু থেকে বিগত কয়েক দশকে পাওয়া অনেক দেশপ্রেমিক, আদর্শবান ও দক্ষ রাজনীতিবিদ তার প্রমাণ। কিন্তু প্রায় আড়াই দশক ধরে এ নির্বাচন না হওয়ায় এমন নেতৃত্ব আমরা পাইনি। তার বদলে আমরা পেয়েছি মেরুদণ্ডহীন, ‘ভাই নির্ভর’ ও সন্ত্রাসের ছাত্র রাজনীতি। এটা প্রকাশ্য যে, দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকারের বিষয় না দেখে সবসময় ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ দেখে। এ কারণেই ডাকসু নির্বাচনে বেশিরভাগ সময় সরকার সমর্থিতরা পরাজিত হয়েছে। তাই বিভিন্ন কারণে বিএনপির শাসনামল থেকে আর এ নির্বাচন আলোর মুখ দেখেনি। আমরা আশা করি, স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতির উপরোক্ত কথার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে ডাকসুর নির্বাচন দিতে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। কারণ, রাজনীতিকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের পথ থেকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে এনে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ডাকসু এবং ডাকসু নির্বাচনের বিকল্প নেই। আর দেশে যখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ও উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন হচ্ছে তখন ডাকসুসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে বাধা কোথায় তা আমাদের বোধগম্য নয়।