ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে ভগবতী প্রসাদ নামের এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তার বাসার টয়লেটের ভেতর একটি কাঠের টুল নিয়ে বসে থাকতে। ছবির সাথে তার আধার কার্ড ও ফোন নাম্বারের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি।
ভগবতী প্রসাদ উত্তর প্রদেশের সীতাপুরের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আর ওই ছবিটা হলো ‘প্রমাণ’ যে তার বাড়িতে টয়লেট আছে। ছবিটা দেয়ার একমাত্র কারণ, বাসায় টয়লেট থাকার প্রমাণ দেখাতে না পারলে ভগবতী আর স্কুল থেকে বেতন পাবেন না!
কিছুদিন আগে সীতাপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শীতল ভার্মা সীতাপুরের সব সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তাদের অধীনস্থ কর্মীদের বলতে, যেন তারা জেলা পঞ্চায়েত রাজ্য অফিসারের কাছে ছবিসহ তাদের বাসায় টয়লেট থাকার প্রমাণ পাঠান।
শীতল ভার্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদির ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচির অধীনে ভারতের সব গ্রামবাসীর ২০১৮ সালের ২ অক্টোবরের মধ্যে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ বন্ধ করতে হবে। আর এজন্য জরুরি প্রত্যেক বাড়িতে একটি করে টয়লেট থাকা।
এই টয়লেট থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই আসে ছবি তোলার প্রসঙ্গ। ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দেন, সরকারের বিভিন্ন খাতে কর্মরত প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ টয়লেটের ছবি পাঠাতে হবে। ছবি পাঠাতে ব্যর্থ হলে তা ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে তাদের বেতনে।
‘আগামী ২৭ মে’র মধ্যে ছবি জমা না দিলে তাদের বেতন বন্ধ করে দেয়া হবে,’ সতর্ক করে বলেন শীতল।
সীতাপুর শিক্ষা বিভাগের মৌলিক শিক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তা অজয় কুমার সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক এবং শিক্ষক নন, এমন সব কর্মীর কাছে এ নির্দেশনা পৌঁছে দেন। আর এর সাথে সাথেই ভগবতী প্রসাদ তার টয়লেটের ছবি ও অন্যান্য তথ্য পাঠিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছে।
সবাই অবশ্য এই শিক্ষকের মতো বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নেননি। অনেকেই এর প্রতিবাদ করে নির্দেশটি ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সব দাবি, অনুরোধ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
মোদির পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ার চেষ্টাকে এগিয়ে নিতে এটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের একটি ছোট প্রচেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন অজয় কুমার। মোদির স্বপ্নকে সত্যি করতে সরকারি কর্মীদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
তাই ভারতকে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ থেকে মুক্ত করতে এসব নির্দেশ মেনে চলতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।