মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার পরিবার নিয়ে লেখা বিতর্কিত বইয়ে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজ কর্মীরা তাদের এই প্রেসিডেন্টকে ‘শিশু’ হিসেবে দেখেন। তবে এর প্রতিবাদ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, তার মনে কখনোই ট্রাম্পের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি।
লেখক মাইকেল উলফ বলেছেন, প্রায় ২০০ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তিনি ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ’ বইটি লিখেছেন। সেসব সাক্ষাৎকারেই ট্রাম্পের প্রতি অধিনস্থদের এই দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে বলে তার দাবি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার মেয়ে ইভানকা, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ জালিয়াতিসহ নানা বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্যে পূর্ণ বইটি প্রকাশের পর গণমাধ্যমে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে উলফ বলেন, ‘হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্টাফরাই তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রেসিডেন্টের আচরণকে তারা তুলনা করেন একটি শিশুর সঙ্গে, যাকে তাৎক্ষণিকভাবে সন্তুষ্ট করতে হয়। সবকিছু যেন তাকে ঘিরেই… এই মানুষ কিছু পড়েন না, কারও কথা শোনেন না। তিনি একটা পিনবলের (এক ধরণের বোর্ড গেম) মতো শুধু এক কোণ থেকে অন্য কোণে ছুটে যাচ্ছেন।’
ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে লেখা এ বইকে ‘মিথ্যা তথ্যে পরিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট। আইনজীবীর মাধ্যমে বইটির প্রকাশনা বন্ধ করার চেষ্টাও করেছেন ট্রাম্প। তবুও নির্ধারিত সময়ের আগেই বিক্রি শুরু হয়ে গেছে ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি।
ট্রাম্প বলেছেন, তার ও তার সরকারের ক্ষতি করতেই বইটি দ্রুত প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দল এর সঙ্গে জড়িত ইঙ্গিত করে তাদেরকে তিরস্কার করে তিনি বলেন, ‘তাদের আসলে একটা নির্বাচন জিতে দেখানো উচিত। আহারে!’
বইয়ে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন নিজেই ট্রাম্পকে ‘নির্বোধ’ বলে গালি দিয়েছিলেন। তবে তা অস্বীকার করে সিএনএন’কে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের মানসিক সুস্থতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো কারণই নেই আমার।’
টিলারসনের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতের অন্যান্য প্রেসিডেন্টদের মতো নন। ‘আমার মনে হয় এটা সর্বজনস্বীকৃত। এ কারণেই আমেরিকান জনগণ তাকে বেছে নিয়েছে,’ বলেন তিনি।
টিলারসন আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার একটা ‘উন্নয়নশীল সম্পর্ক’ আছে। এছাড়া এর আগে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়ার গুঞ্জনকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, পুরো ২০১৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের দায়িত্বে তিনি থাকবেন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আগের চেয়ে আরও ভালোভাবে যোগাযোগ করার জন্য দক্ষতা বাড়ানোর কাজ করে যাবেন বলেও জানান টিলারসন।
বিবিসি জানায়, শুক্রবার দু’দিনের সফরে হোয়াইট হাউজ থেকে ক্যাম্প ডেভিডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময় সাংবাদিকদের বহু চেষ্টার পরও ওই বই সম্পর্কে তাদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।