টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছয় মাস আটকে রেখে কলেজছাত্রী ভাতিজিকে ধর্ষণের ঘটনার মধ্যেই জেলার বাসাইল উপজেলায় অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
ওই স্কুলছাত্রীর স্বজনদের অভিযোগ নানা টালবাহানা করে ঘটনার তিন দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় মামলা নিয়েছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, ধর্ষকের দুই সহযোগী সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামের শাকিল ও মাসুমকে আটক করা হলেও তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
মেয়েটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর মেয়েটি অনেকটাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।
ঘটনার শিকার মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে স্কুলে যাওয়ার পর পার্শ্ববর্তী সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে আশিকের নেতৃত্বে ২ থেকে ৩ জন যুবক মেয়েটিকে প্রথমে বাসাইল হয়ে নলুয়ার মুস্তাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরের দিন দেলদুয়ার উপজেলার পেরাকজানী গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ির সামনে মেয়েটিকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।
স্বজনদের অভিযোগ, ৩ আগস্ট সকালে বাসাইল থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত মেয়ে ও মেয়ের বাবাকে পুলিশ থানায় কৌশলে আটকে রাখে। এ সময় পুলিশ তাদেরকে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতেও দেয়নি। পরে শনিবার পুলিশ গণধর্ষণের মামলা না নিয়ে আশিককে আসামি করে মামলাটি রেকর্ড করে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় শনিবার সকালে সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে আশিক (১৮) কে মূল আসামি এবং আশ্রয়দাতা মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫) ও তার স্ত্রী ইতি বেগমের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড হয়েছে।
ওই স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে আশিকসহ তিনজনে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় বাসাইল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা রেকর্ড করেনি। তিনদিন পর মামলাটি রেকর্ড করে। ঘটনার দুই সহযোগীকে আটক করা হলেও রাতে তাদের অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’
এ ব্যাপারে বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ ঘটনায় শনিবার একটি মামলা হয়েছে। মেয়েটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল পাঠানো হয়েছে।’
তবে টাকা নিয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।