জঙ্গিবাদকে ভিন্নভাবে দেখতে আইনজীবীদের অনুরোধ জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেছেন: টাকা দিলেই জঙ্গিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানো যাবে না, জঙ্গিবাদকে আইনী সহায়তা দিলে বিষয়টি হবে আত্মঘাতী।
রোববার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনজীবীদের উদ্দেশে বেনজীর আহমেদ বলেন: টাকা দিলেই জঙ্গিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানো যাবে না। চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অন্য ৮-১০টি অপরাধের মতো জঙ্গিবাদকে দেখা যাবে না, তাহলে বিষয়টি হবে আত্মঘাতী। জঙ্গিরা আদালতেও হামলা করেছে, কেউ তাদের আওতার বাইরে নয়।
তিনি বলেন: হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫১২ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০০ জন জামিনে আছেন, যাদের অধিকাংশই পলাতক আছেন।
র্যাব ডিজি বলেন: আপনারা যাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে জামিনের ব্যবস্থা করেছেন, তাদেরকে আবার কোর্টে হাজির করেন, সমস্যা নেই। কিন্তু তারা প্রায় সবাই পলাতক রয়েছে। তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ, জঙ্গিদের বিষয়টাকে আপনার ভিন্নভাবে দেখবেন।
আইনের ফাঁক দিয়ে জঙ্গিরা বের হয়ে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: আইনের কোনো সমস্যা নেই, আইন প্রয়োগে সমস্যা থাকতে পারে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন: বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় তিন পর্যায়েই জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। তবে নিজস্ব গোয়েন্দাদের পাশাপাশি অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
কোনো ধরনের অপতৎপরতার খবর পেলে যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগে প্রস্তুত থাকার কথাও জানান তিনি।
দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন: জামিনে পলাতক থাকা জঙ্গিরা আবারো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা বেশিদিন এ তৎপরতা চালাতে পারবে না।
তিনি জানান: ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস-ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে যানজট এবং দূর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে দেশজুড়ে ৪২টি স্থানে র্যাবের নজরদারী রয়েছে। তবে এবার সড়ক এবং নৌপথে ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে, রেলপথে কিছুটা বিলম্ব রয়েছে।
২৪ ঘণ্টা সড়ক-নৌ এবং রেলপথে নজরদারী রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন: ঈদে বাড়িতে যাত্রা এখনো স্বস্তিদায়ক রয়েছে, আশা করছি ফেরার যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হবে। আমরা চাই না, সড়কে কোনো প্রাণহানী হোক।
জাতীয় ঈদগাহসহ রাজধানীতে ৫ শতাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন: রাজধানী ছাড়াও শোলাকিয়া, দিনজপুরসহ সবকটি বড় ঈদ জামাতে নিরাপত্তা কাভার করা হবে।
বেনজীর আহমেদ বলেন: সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে ঈদ উৎসবটি নিরাপদ করার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজুড়ে র্যাবের সর্বোচ্চ উপস্থিতি প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঈদে ফাঁকা শহরগুলোতে যে কোনো অপরাধ রুখতে আমাদের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ঈদ উদযাপন নিরাপদ করতে পূর্ণ প্রস্তুতির কথা জানান র্যাব ডিজি।