দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কোন্দল ও জমিজমা সংক্রান্ত মামলার জেরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কাথাইল গোপীনাথপুর গ্রামের মাঠে প্রায় দেড় বিঘা জমিতে আধা-পাকা আমন ধান ক্ষেতে আগাছা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে ফসল নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার জমির মালিক জয়পুরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন, দক্ষিণ পাকুরিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, পরিবানু, বেদেনা খাতুন এবং শিল্পি বেগম।
সরেজমিনে ওই মাঠে গিয়ে জমির মালিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে এবং মামলার বিবরণে জানা যায়, কালাই উপজেলার দক্ষিণ পাকুরিয়া গ্রামের চাষি মোশারফ হোসেন পার্শ্ববর্তী কাথাইল গোপিনাথপুর গ্রামের মাঠে তার নিজস্ব দেড় বিঘা জমিতে আমন ধান লাগায়। ইতিমধ্যে ওই মাঠের আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পর তার ধান কাটা হবে। এরই মধ্যে গত সোমবার তার ক্ষেতে আগাছা নিধনের ঔষুধ ছিটিয়ে দেয়। বুধবার সকালে জমির মালিক মাঠে গিয়ে দেখে তার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের কাঁচা গাছ শুকিয়ে গেছে। শীষের ধান পেকে ঠোশা হয়ে গেছে। গাছগুলো মাটিতে পড়েও যাচ্ছে।
জমির মালিক ও মামলার বাদী মোশারফ হোসেন বলেন, ওই জমিতে আমি দীর্ঘদিন ধরে ফসল ফলাচ্ছি। জমিও আমার দখলে রয়েছে। মামলায় হেরে গেলে অবশ্যই জমি তাদের ছেড়ে দিব। তার আগে কেন ওরা বারবার আমার ফসল নষ্ট করছে। এর আগেও একবার এই জমির ফসল নষ্ট করেছে। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নামে মামলা করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শী আকতার হোসেন বলেন, আমন ধানের একটি গাছও জীবিত নেই। আগাছা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে পুরো দেড় বিঘা জমির ধানই নষ্ট করে ফেলেছে। কয়েকদিন পরই ধান কাটা হত। এ ঘটনায় যাদেরকে আসামী করে জমির মালিক মামলা করেছে তাদের সাথে ওই জমি নিয়ে অনেক আগে থেকে আরেকটা মামলাও চলমান রয়েছে।
অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম বলেন, জমিজমা নিয়ে একটি মামলা চলমান রয়েছে এটা সত্য, এছাড়া আমাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায়ও আরেকটি মামলা রয়েছে। ওই মামলাগুলোতে সে হেরে যাবে ভেবে নিজেই এ কাজ করে এখন আমাদের দোষারোপ করছেন। আমরা তার ফসলের ক্ষতি করবো কেন? এটা ওর পূর্ব পরিকল্পিত কাজ।
আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, শুনেছি ওদের ক্ষেতে ওষুধ ছিটিয়ে ফসল নষ্ট করেছে। তাই ওরা ৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। আবার নতুন করে এই ঘটনা ঘটলো।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, ফসল নষ্টের বিষয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।