শেষ বিকেলে শতক থেকে আট রান দূরে থাকতে সাজঘরে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। ঠিক পরের বলে লিটন কুমার দাস পরিষ্কার অফস্টাম্প ঘেঁষা বল ছাড়তে চেয়ে ক্লিনবোল্ড! তার আগে তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিম এবং মুমিনুল হকের রেকর্ড গড়া জুটিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথমদিন চার উইকেটে ৩৭৪ রান করে বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটে নেমে তামিম-ইমরুল ফিরে যাওয়ার পর মুমিনুল এবং মুশফিক তৃতীয় উইকেটে ২৩৬ রান যোগ করেন। এই উইকেটে বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ রান। যে কোনো উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ।
ত্রিদেশীয় সিরিজে ঢাকার উইকেট নিয়ে অনেক আলোচনা হওয়ার পর চট্টগ্রামে চাহিদামত স্কোরিং উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। তামিম-ইমরুল শুরু থেকে চালিয়ে খেলতে থাকেন। দলীয় ৭২ রানের মাথায় তামিম বিদায় নেন। ৫৩ বলে ৫২ করে পেরেরার বলে বোল্ড হন দেশসেরা ওপেনার। ছয়টি চার একটি ছয়ের মার ছিল তার ইনিংসে। এরপর ইমরুল সান্দাকানের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৭৫ বলে ৪০ করেন। চারটি চার মারেন তিনি।
পরের সাড়ে চার ঘণ্টা মুশফিক-ইমরুল লঙ্কান বোলারদের নাচিয়ে ছাড়েন। মুশফিক শতক থেকে আট রান দূরে থাকতে সুরাঙ্গা লাকমালের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। পরের বলে লিটন বিভ্রম। ইনসুইঙ্গার বুঝতে পারেননি। কিন্তু তাই বলে দায় এড়াতে পারছেন না। যে জায়গায় বল পিচ করেছে, সেটা ওভাবে ছাড়ার কথা নয়। লিটন তবু তাই করলেন!
মুমিনুল ৯৬ বলে শতকে পৌঁছান। টেস্টে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় দ্রুততম শতক। এরপর দেশের দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ৪৭ ইনিংসে দুই হাজার রান করলেন মুমিনুল। ৫৩ ইনিংসে করেছিলেন তামিম। এই টেস্টের আগে মুমিনুলের রান ছিল ১৮৪০। এদিন ২০৩ বল খেলে ১৭৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। এর মধ্যে ১৬টি চার, একটি ছয়। তার সঙ্গে ৯ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন রিয়াদ।
শেষ বিকেলে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ একদিনে সবচেয়ে বেশি রান তোলার নিজেদের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবে। কিন্তু মুশফিক-লিটনের বিদায়ে সেটা হয়নি। টেস্টে একদিনে বাংলাদেশের সর্বাধিক রান ৩৮৮। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়দিন এই রান তুলেছিল টাইগাররা। আলো কমে যাওয়ার পর প্রথমদিন ১৫৩ রান নিয়ে শেষ করার পর দ্বিতীয় দিন ৫৪২ রান তোলে মুশফিকের দল।
বাংলাদেশ এদিন তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমেছে। চার বছর পর স্কোয়াডে ডাক পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক একাদশে সুযোগ পাননি। স্পিন-অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে আছেন তাইজুল ইসলাম। স্পিন সামলাতে তাদের সঙ্গী সানজামুল।
লঙ্কান স্পিনারদের দেখে বোঝা গেছে উইকেটে তেমন কিছু নেই। রঙ্গনা হেরাথের মতো বোলার ২০ ওভার বল করে ১০০ রান দিয়ে উইকেটহীন। সকালে-বিকেলে সুইংয়ে বিভ্রান্ত করা পেসার লাকমাল দুই উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট দিলরুয়ান পেরেরা এবং লক্ষ্মণ সান্দাকানের।